নিজস্ব প্রতিবেদক : সৃষ্টিকর্তা প্রকৃতিকে সাজিয়েছেন বন্যপ্রাণী, উদ্ভিদ আর পরিবেশের অন্যান্য উপাদান দিয়ে। মানুষের লোভের কারণে বনভূমি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির বন্ধু বন্যপ্রাণী। ফলে ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রকৃতি।
প্রতিশোধ হিসেবে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে। বজ্রপাত, সুনামি, সুপারসাইক্লোনসহ নানারকম প্রকৃতিক দুর্যোগ সময়ে-অসময়ে হানা দিয়ে জীবন-জীবিকা তছনছ করে দিচ্ছে। বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস আজ।
২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনে ৩ মার্চকে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০১৪ সালে প্রথম এ দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্বের বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদকুলের প্রতি গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা এই দিবসের মূল লক্ষ্য।
বাংলাদেশেও প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে। বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে, ‘সকলের অংশগ্রহণ, বন্যপ্রাণী হবে সংরক্ষণ’।
আবাসস্থল হারিয়ে ক্রমেই হুমকি বাড়ছে দেশের বন্যপ্রাণীর। অনেক বণ্যপ্রাণী বাসস্থান হারিয়েছে। আবার বন উজাড়ে হ্রাস পাচ্ছে তাদের খাদ্যের জোগান। ফলে উদ্বাস্তু প্রাণীরা মানুষের ঘরবাড়িতে হানা দিচ্ছে। বাংলাদেশে চার ধরনের বন্যপ্রাণী এই হুমকির মুখে রয়েছে। এরা হচ্ছে উভচর, সরীসৃপ, পাখি ও স্তন্যপায়ী। বন বিভাগের এক হিসাবে ৪২ প্রজাতির উভচরের মধ্যে ৮টি, ১৫৮টি প্রজাতির সরীসৃপের মধ্যে ৬৩টি, ৭৩৬টি প্রজাতির পাখির মধ্যে ৪৭টি, ১২৪টি স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে ৪৩টির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন।
আইইউসিএন ও বন অধিদপ্তর যে লাল তালিকা করেছে, তাতে দেখা গেছে দেশের ১৬১টি প্রজাতি হুমকির মুখে। এরা মহাবিপন্ন, বিপন্ন কিংবা সংকটাপন্ন। আর এই চার দলের প্রাণির মধ্যে তুলনামূলকভাবে স্তন্যপায়ীর অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। বিশেষ করে মিঠাপানির নদীর শুশুক লাল তালিকায় বিপন্ন প্রজাতি। এর অর্থ হলো এটি নিকট ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এটিকে টিকিয়ে রাখতে হলে নদী রক্ষা করতে হবে। বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় বিশ্বের সব নাগরিককে সোচ্চার আর সচেতন হতে হবে। যেখানেই বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটিত হবে সেখানেই স্থানীয়দের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এ বছর বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস শুক্রবার হওয়ায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়েরর বন অধিদপ্তরের উদ্যোগে আগামী রোববার এই দিবসের কর্মসূচি পালন করা হবে। এদিন সকালে ঢাকার আগারগাঁও এর বন ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।