বেনাপোল প্রতিনিধি : রমজানকে সামনে রেখে বেনাপোল বন্দর দিয়ে বেড়েছে ভোগ্যপণ্য আমদানি। বেশি আসছে ছোলা ও বিভিন্ন ধরনের ফল। আমদানি স্বাভাবিক থাকলে আগামী দুই মাসে ভোগ্যপণ্যের দাম অনেকটা কমে আসার সম্ভাবনা করছেন ব্যবসায়ীরা।গত তিন দিনে কয়েকশ‘ ট্রাক ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। দ্রুত খালাস প্রক্রিয়া শেষে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। তবে জায়গা স্বল্পতার কারণে পণ্য খালাসে বেশি সময় লাগছে বলে দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের।
গত তিন দিনে ৩ শ‘ ২০ ট্রাক ভোগ্যপণ্য ও ফল আমদানি হয়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৫৫ ট্রাক ভোগ্যপণ্য ও ফল আমদানি হয়েছে। তবে এ তিনদিনে ফল আমদানির পরিমাণ বেশি। চিনির শুল্ক কমানোর পর এ পর্যন্ত কোন চিনি, খেজুর আমদানি হয়নি ভারত থেকে। তবে রোজা শুরুর আগেই খেজুর আমদানি হবে বলে জানান কয়েকজন ব্যবসায়ী।
রমজানকে সামনে রেখে ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে ছোলা ও বিভিন্ন রকম ফল। ঋণপত্র খোলার জটিলতা নিরসন হওয়ার পরপরই ছোলা আমদানি শুরু হয়ে গেছে। তবে ফল আমদানি হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। এসব পণ্যের বাজারদর স্বাভাবিক রাখতে এলসি সহজের বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আগেই নির্দেশ দিয়েছে সরকার। একারণে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্যের দাম সহনীয় থাকার আশা ব্যবসায়ীদের। কিন্থু বাজারে দাম আকাশচুম্বী।
এদিকে বেনাপোল বন্দরের প্রতিকেজি ছোলা পাইকারি বাজারে ৭৮ টাকা ও খুচরা বাজারে ৮৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাইকারি বাজারে চিনি ১০৩ টাকা, পেঁয়াজ ২০ টাকা, আপেল ১৮০, আঙুর ২০০ টাকা ও কমলা ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে চিনি ১১২ টাকা, পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, আপেল ২৩০, আঙুর ২২০ টাকা ও কমলা ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, চাহিদা থাকায় ভারত থেকে অধিক পরিমাণে ছোলা ও ফল আমদানি করা হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক এলসি দেয়ায় খাদ্য আমদানি সহজ হয়েছে বলে জানান তারা।
আর ক্রেতারা জানান, রমজান এলেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এজন্য দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোজায় বাজার মনিটরিং জোরদার করার দাবি তাদের।
বেনাপোল বাজারের আড়তদার ইছাহাক উদ্দিন বলেন, ভারত থেকে ছোলা আমদানি বেড়েছে। কাজেই সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণে ছোলার দামও কমছে। কিন্থু খোলা বাজারে দাম তেমন কমছে না। বাজার মনিটরিং জোরদার করার দাবি তার।
এদিকে বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী হেমন্তকুমার সরকার জানান, ভারত থেকে আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্যগুলো খাওয়ার উপযোগী কিনা যাচাই করতে মান পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরপর বন্দর থেকে ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, ভোগ্যপণ্য দ্রুত বন্দর থেকে খালাস করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বছরে বাংলাদেশে ১ লাখ ২০ হাজার টন ছোলার চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে শুধু রমজান মাসেই ইফতারের জন্য ৮০ হাজার টন ছোলার প্রয়োজন হয়।