শায়লা সিমি নূর: মস্তিষ্ক -(ক্রিটিকাল পয়েন্ট অব ব্রেন) মস্তিষ্ক মানুষের শরীরের সবচেয়ে জটিল অঙ্গগুলির মধ্যে একটি হিসাবে পরিচিত। এটি আমাদের প্রতিটি চিন্তা, কর্ম, স্মৃতি, অনুভূতি এবং অভিজ্ঞতার প্রক্রিয়াকরণে ন্যস্ত। একজন স্রষ্টা ছাড়া এত জটিল সৃষ্টি হতে পারে না। মানবদেহ এবং এ’ সম্পর্কিত জ্ঞান , আল্লাহর প্রতি আমাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। তিনি(আল্লাহ)ছাড়া এই ধরনের জটিল সৃষ্টির অস্তিত্ব থাকবে না। কোরান ২:১১৭- তিনিই আসমান ও জমিনের উদ্ভব করেন , এবং যখন তিনি কোন জিনিসের (উৎপত্তি) করতে চান, তিনি কেবল এটিকে বলেন: হও, এবং তা’ হয়ে যায়।
উদহারণ দিয়ে অর্ডার ও ডিসর্ডার বুঝানো হলো –
প্রকৃতিতে বর্তমান প্রতিটি জীব এমনকি প্রতিটি বস্তু একটি বিশেষ ধর্মে থাকে যেমন, চম্বুকের ধর্ম আকর্ষণ করা। চম্বুককে লোহার সঙ্গে লাগিয়ে দিয়ে যদি; চম্বুকে উত্তপ্ত করা হয় মানে আগুন দিয়ে তাপ দেওয়া হয় এর ধর্ম বা যে অর্ডারে আছে তা পরিবর্তন হয়ে ভিন্ন ভাবে ক্রিয়া করবে অর্থাৎ চম্বুক লোহাকে আর আকর্ষণ না করে দূরে সরে যাবে। প্রতিটি সৃষ্টির একটি ধর্ম আছে এবং তার নিজস্ব ক্রিয়া আছে।
ক্রিটিকাল পয়েন্ট অব ব্রেন – যখন পৃথিবী স্বাভাবিক অবস্থা থেকে ক্রিটিকাল পয়েন্টে এসে পৌঁছায় তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীতে সমাধানসহ একজন বার্তাবাহক আসেন। একটি পরিবর্তিত অবস্থায় , আমাদের মস্তিষ্কের আবেদন অবস্থান পরিবর্তন করে একটি উত্তেজিত অবস্থায় এসে পৌঁছয়। ভয় , আশঙ্কা ইত্যাদি অবস্থায়… এ’ অবস্থায় যাওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন বর্তমানে ইন্ডিয়ানা উনিভার্সিটির প্রফেসর জন বিগস ও তার দল। কিন্তু এই ক্রিটিকাল পয়েন্ট থেকে কি উপায়ে ব্রেন স্বাভাবিক অবস্থায় আসবে, তারা জানেন না …ব্রেন প্রতিনিয়ত বিশ্ব জগৎ থেকে নানা তথ্য সংগ্রহ করে – এ সকল তাকে ভাবায় ও উত্তেজটা তৈরি করে।
মুসলিমরা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন ওজু করেন ও নামাজে দাঁড়ান। বলা আছে যে নামাযে পৃথিবীর কোনো চিন্তা করা যাবে না। এক আল্লাহর দরবারে সকল ভাবনা , লোভ, ক্ষয়-ক্ষতি , লাভ সব ফেলে দাঁড়াবেন ও ক্ষমা চাইবেন। এই একটি প্রসেসেই মানুষ ও তার ব্রেন জিরো পয়েন্টে এসে গেলো। এবং সেজদা করার ফলে তার সমস্ত দেহে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়ে
গেলো।
সিম্পলিফায়িং এট এ ক্রিটিকাল পয়েন্ট – ক্রিটিকাল পয়েন্ট সর্বোচ্চ অবস্থান … সকল সরলতার মাপকাঠি। কারণ জটিলতা যখন সর্বোচ্চে থাকে তখন , কোনো ব্যাখ্যা না পেয়ে নিজের কাছে ফিরে আসে সমাধানের জন্য। যাতে এই অবস্থান তাকে সংবেদনশীল করে তুলতে না পারে, কিভাবে সমাধানে আসা যায় সেই লক্ষ্যে! সরল ও সঠিক পথ কি? কেন মানুষের জন্য জীবনবিধান দেওয়া হলো ?
মানুষ ছাড়া যেহেতু বাকি সকল জীব ও সৃষ্টি আল্লাহর তরফ থেকে অর্ডারে থাকে ও তাদের ক্ষমতা সীমিত এবং মানুষ নিজের ইচ্ছেশক্তিকে একটি পর্যায় পর্যন্ত কাজে লাগাতে পারে, তাই মানুষের জন্য নির্দেশ দেওয়া আছে – দোয়া ও আমলের।
দু’আ- দু’আ শব্দের অর্থ আল্লাহকে ডাকা, কিছু চাওয়া, প্রার্থনা করা মহান আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার থেকে বেঁচে থাকার জন্য প্রার্থনা করাই হল দোয়া। এই দু’আকে আল্লাহ ইবাদত হিসেবে অভিহীত করেছেন এবং সাহায্য লাভের মাধ্যম বানিয়েছেন।
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া’ই ইবাদত। (জামে আত তিরমিজি) দু’আ হল আল্লাহর নৈকট্যলাভের বিশেষ বাহন ও মাধ্যম। আল্লাহর নিকট প্রার্থনা, প্রত্যাশা ও সাহায্য কামনার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নিকটবর্তী হয়। এ দ্বারা মানুষ তার প্রতিপালকের ইবাদত করে, উদ্দেশ্যে লাভে সফল হয়, তার সন্তুষ্টি অর্জন করে। এই ভাব প্রকাশের মধ্য দিয়ে আমরা জেনে গেলাম যে , যে সকল বিষয়ে জ্ঞান আমাদের মাঝে উপস্থিত নাই তার সমাধান হলো দু’আ।