জঙ্গি কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টটার অভিযোগে বন্ধ থাকা রাজধানীর লেকহেড গ্রামার স্কুল চালু করে দিতে চেয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মো. মোতালেব হোসেন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ মান সহকারী নাসির উদ্দিন। এ জন্য তারা ওই বিতর্কিত স্কুলের মালিকের কাছ থেকে ঘুষও নিয়েছিলেন। এ জন্য ওই দু’জনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হয়েছে।
মাত্র ৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে সাড়ে ৪ কোটি টাকা দিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন পিও মোতালেব হোসেন। কৃষক পরিবারের সন্তান মোতালেব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের টাইপিস্ট পদে তার কর্ম জীবন শুরু করেন। এরপর তিনি পদোন্নতি পেয়ে দ্বিতীয শ্রেণির কর্মকর্তা হন, দায়িত্ব পান শিক্ষামন্ত্রীর পিও হিসেবে। দায়িত্ব পেয়েই তিনি মন্ত্রণালয়ে বসে তদবির এবং ঘুষ বাণিজ্য শুরু করেন। বিষয়টা নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কানা ঘুষা ছিল। পুলিশী অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোতালেব রাজধানীর বসিলা এলাকায় ৫তলা বাড়ি তৈরি করছেন, ইতিমধ্যে সেখানে সাড়ে ৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা মনে করেন, সরকারের এমন অনেক দপ্তর আছে, যেখানে অবাধে ঘুষ বাণিজ্য চলে। স্বল্প বেতনের কর্মচারিরা বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁরা থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে, সমাজের মুষ্ঠিমেয় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারির অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রভাব পড়ে দেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তির উপর। সুশাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এসব অনতিবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার।
সরকারি কর্মচারীদের ঘুষ বাণিজ্যের একটা চিত্র উঠে এসেছে মোতালেবের আটকের মাধ্যমে। যদি সে স্পর্শকাতর লেকহেড তদবিরে না জড়াতেন তাহলে হয়ত বিষয়টা লোক চক্ষুর অন্তরালেই থেকে যেত। হয়ত অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব নিলে অনেকের ক্ষেত্রেই এমন চিত্র উঠে আসবে। সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে যে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা আছে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। জাতীয় স্বার্থে, সকল কর্মচারিদের হিসাব সরকারি খাতায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে হয়তো এর মাত্রা কমে আসবে। সেই সাথে কর্মচারিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।