আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব উপলক্ষ্যে ফুলের বাজার সরগরম হয়ে উঠেছে। গতকাল সোমবার থেকেই ফুল বিক্রির ধুম পড়েছে। ফুলের দোকানগুলো সেজেছে অপরূপ সাজে। ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়া সড়কে জমিরের ফুলঘর জেলার বৃহৎ ফুলের দোকান। লাখ লাখ টাকার বাহারী ফুল এখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌছে যাচ্ছে। জমির নিজেও ফুল সমিতির সভাপতি। তিনি আশা করছেন তিন উৎসবকে ক্রেন্দ করে জেলায় ৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে বাজার ধরতে ফুল পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষীরা। গাদা, গোলাপ, জারবেরাসহ অন্যান্য ফুলের জমিতে সেচ দেওয়া থেকে শুরু করে মান ভালো রাখতে পোকা দমনে নানা ধরনের ছত্রাক নাশকও স্প্রে করা হচ্ছে। অনেকে আবার ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন ফুল। তবে পরিচর্যার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার কথা জানান কৃষি বিভাগ।
চলতি মৌসুমে জেলায় ফুলের আবাদ হয়েছে ১৬৮ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে গাদা ফুলের পরিমানই শতকরা ৬৫ ভাগ। দেশের মোট গাদা ফুলের চাহিদার সিংহ ভাগই পুরণ হয় ঝিনাইদহের ফুলের মাধ্যমে। আসা করা হচ্ছে চলতি মৌসুমে ২১শে ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রয় হবে। ফুটে আছে লাল, হলুদ, কমলা রঙের জারবেরা, কোথাও গাদা ফুল গাছে এসেছে কুড়ি, কোথাও বা ফুটেছে ফুল। এমনই চিত্র ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকার ফুল ক্ষেতের। এই ক্ষেতগুলোতে চাষীরা দিনান্ত পরিশ্রম করে চলেছে পরিচর্যায়।
ফুল চাষীরা বলছেন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, বসন্ত আর আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস। এই উৎসব ঘিরে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুন। দামও হয় অনেক বেশী। তাই শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা চলছে। সামনের বাজার পেতে অনেক ফুলই ক্ষেতে রেখে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আজ ১৪ ফেব্রয়ারি থেকে চাহিদা ও দাম বেড়ে যাবে কয়েকগুন। প্রতিদিন এক একটি বাজারে গড়ে ৫০ লাখ থেকে ৬০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হবে। বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে হলুদ কালারের ফুলের চাহিদা সব থেকে বেশী। ফুল ব্যাবসায়ী সমিরি সভাপতি জমির উদ্দীন জানান, এবছর ফুলের বাজার চড়া। বৈশ্বিক মন্দা ও সব কিছুর দাম বৃদ্ধির কারণে ফুলের দামও বেড়েছে। তিনি আশা করছেন এসব সত্তেও ফুল প্রেমীরা প্রিয়জনকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিতে ভুলবেন না।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আজগর আলী বলেন, ফুলের শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা ও ফুল সংরক্ষণে কৃষকদের নিয়মিতই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে এবার পদ্মা সেতু চালুর ফলে ঢাকা, চট্রগ্রাম সহ বিভিন্ন স্থানে যানজটের বিড়ম্বনা ছাড়াই সঠিক সময়ে ফুল পৌছাতে পারবে ব্যবসায়ীরা। গ্রাহকরাও পাবে তাজা ফুলের সুগন্ধ।