নতুন বছরের প্রথম দিনে সারাদেশে অনুষ্ঠিত হলো বই উৎসব। প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এদিন পেয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই। সারা দেশে মোট ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৬ হাজার ৮৯৫ শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যের ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২টি পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হয়।
বর্তমান সরকার ৯ বছর আগে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর পাঠ্যপুস্তকসংক্রান্ত দুটি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিল। প্রথমত, বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া; দ্বিতীয়ত, প্রাথমিকের পর মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরও বিনামূল্যে বই প্রদান। তখন এই পরিকল্পনাকে ‘উচ্চাভিলাষী’ আখ্যা দিয়ে অনেকে এর সাফল্য সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তখন পাঠ্যপুস্তক ছাপা, পরিবহন ও বিতরণকে কেন্দ্র করে একটি অসাধু চক্র প্রায় প্রতিবছরই প্রাথমিক শিক্ষার্থী তথা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তিকেই কীভাবে জিম্মি করে ফেলত আমাদের মনে আছে। আমরা আনন্দিত যে, সব শঙ্কা ও সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে সরকার ধারাবাহিকভাবে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে।
মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তক কেনার সামর্থ্য না থাকায় কত মেধাবী শিক্ষার্থীকে যে মাঝপথে ঝরে পড়তে হয়েছে! এখন সবই ইতিহাসের অংশ। তবে শুধু বই বিতরণই নয় শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে এখন বেশি নজর দিতে হবে। তবে গত বছরও বিচ্ছিন্নভাবে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে পাঠ্যপুস্তক বিতরণে অর্থ আদায় এবং নামিদামি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তিতে উচ্চ হারে মাসিক বেতন ও ফি আদায়ের অভিযোগটি বিশেষভাবে নজরে এসেছে।
তবে সবকিছুর পরও প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে প্রায় ৩৫ কোটি ৪২ লাখ নতুন বই তুলে দেওয়ার দুরূহ কাজটি সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানাই। এবং শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের স্বার্থেই সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে, সেটাই এখন সবার প্রত্যাশা।