October 8, 2024 - 3:21 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeসারাদেশ ও রাজনীতিসারাদেশহাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

spot_img

তিমির বনিক, ষ্টাফ রিপোর্টার: দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাকালুকি হাওর অন্যায় ভাবে পাখি নিধনে শিকারিদের কারণে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা দিনকে দিন কমছে। যার কারণে হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে।চলতি বছরের জানুয়ারির ২৮ ও ২৯ এ দুই দিনব্যাপী হাকালুকি হাওরে করা পাখি শুমারিতে উঠে এসেছে এই তথ্য।

বন বিভাগ, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ণ ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এর যৌথ উদ্যোগে এই শুমারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, বাংলাদেশে ৭১৮টি প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। যা শীতকালে পরিযায়ী হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। আশ্রয় হিসেবে বেঁচে নেয় হাকালুকি হাওরের মতো জলাশয়। প্রায় ১৮১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ হাওরে রয়েছে ছোট-বড় ২৭৬টি বিল। পাখিশুমারিতে তাদের জরিপে হাকালুকিতে এ বছর এসেছে প্রায় ২৫ হাজার পাখি। যা বিগত বছর থেকে বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। যা ২০২০ সালে ছিলো প্রায় ৪০ হাজার ১২৬ পাখি। মাত্র কয়েক বছর আগে দেশে ৫ থেকে ৬লাখ পরিযায়ী পাখি আসতো। এসব পাখির বেশিরভাগ মৌলভীবাজারে ও সিলেটের হাওরে অবস্থান করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করতো।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ণ ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এর পর্যবেক্ষণে বলছে, গত ২০ বছরে সারা বাংলাদেশে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমেছে ৩৫ শতাংশ। হাকালুকিতে কমেছে ৪৫ শতাংশ। ২০০০ সালের আগে হাওরে বিচরণ করতো প্রায় ৭৫-৮০ হাজার পাখি। তার ৮০ শতাংশই হাকালুকি হাওরে ছিলো।

পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, নদী দূষণ, জাল বিষ টোপ ও পটাশ দিয়ে পাখি শিকার। একসঙ্গে বেশ কয়েকটি বিলে মাছ আহরণ, বিল শুকিয়ে মাছ নিধন, বিলে ২৪ ঘণ্টা পাহারা ও জলজ বৃক্ষ নিধনসহ নানান সমস্যার কথা।পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম ও দেলোয়ার হোসেন জানান, হাকালুকি হাওরে যে নদীগুলো মিলিত হয়েছে এখন সেই নদীগুলো! প্লাস্টিক, পলিথিন, দূষিত পানি ও ময়লার ভাগাড়। পাখি কমার বিশেষ কয়েকটি কারণের মধ্যে এটি একটি। অরক্ষিত অবহেলায় থাকায় দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। হাওরের পরিযায়ী পাখি রক্ষায় স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধি করা, পাশাপাশি প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা থাকতে হবে। এতে বাঁচবে পাখি।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিবছর হাকালুকি হাওরে বিল ইজারা দেওয়া হয়। এ বছরও হয়েছে। এতে বেশ লোকসমাগম ঘটে। দিনরাত পাহারা দেওয়া হয়। এসব কারণে পরিযায়ী পাখিরা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে না। বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কারণে নষ্ট হচ্ছে হাওরের জীববৈচিত্র্য। ফলে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ