নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলা একাডেমির আপত্তি জানানো তিনটি বই স্টলে না রাখার শর্তে অমর একুশে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই বইগুলো স্টলে রাখা যাবে না বলেও আদেশে জানানো হয়।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
বাংলা একাডেমির আপত্তি জানানো বইগুলো হচ্ছে- মির্জা ফখরুলের মেয়ের জামাতা ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’, লেখক জিয়া হাসানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ এবং লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব-এর ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা’।
শুনানিতে ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, একটি বইকে কেন্দ্র করে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীর অংশগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ বইটি কালো তালিকাভুক্ত বা নিষিদ্ধ নয়। আর এই প্রকাশনীর আরও ৬০০ বই রয়েছে। স্টল বরাদ্দ না দিলে এসব বইয়ের লেখকেরা বঞ্চিত হবেন। তাই যদি কোনো বইতে বাংলা একাডেমি আপত্তি করে সেটা আমরা স্টলে রাখবো না।’
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি আয়োজিত মাসজুড়ে বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। প্রকাশনীটির স্বত্বাধিকারী মো. মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে রিটটি দায়ের করেন।
রিট আবেদনে আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকাশনীটিকে স্টল বরাদ্দ দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও সভাপতিসহ চার জনকে বিবাদী করা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, শুধুমাত্র তিনটি বইয়ের জন্য কাগজে-কলমে মেলাতে পুরো প্রকাশনীর অংশগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ সে বইটি ব্যান্ড বা ব্ল্যাক লিস্টের নয়। বাংলা একাডেমি আইন ২০১৩ অনুযায়ী তাদের এমন সিদ্ধান্তের কোনও বৈধতা নেই। একইসঙ্গে প্রতিবছর একাডেমি থেকে যে নীতিমালা করা হয়, তারও ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলা একাডেমি। তাদের এমন সিদ্ধান্ত সংবিধানের বাক স্বাধীনতার বিরোধী।
পরে ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি আপত্তি জানানো বইগুলো স্টলে রাখা হবে না, এই মর্মে মুচলেকা দাখিলের জন্য আদর্শ প্রকাশনীকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি বাংলা একাডেমির আপত্তি থাকা তিনটি বই আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: