নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২২ সালের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর ১১টি বোর্ডে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। এবার পাসের হার সবচেয়ে বেশি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৯৪.৪১ শতাংশ। এছাড়া এবারও ফলাফলে এগিয়ে মেয়েরা।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের চামেলী হলে শেখ হাসিনার হাতে এ ফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবসহ বিভিন্ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে। এছাড়া যে কেউ রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ওয়েবসাইট ও মোবাইলে এসএমএস করে ফল দেখতে পারবেন।
এদিন দুপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ফলের বিস্তারিত তুলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি জানান, এবার সব বোর্ড মিলিয়ে পাসের হার ৮৫.৯৫ শতাংশ। পাসের হার কমেছে ৯.৩১ শতাংশ, যা গতবার ছিল ৯৫.২৬ শতাংশ। এবার সবচেয়ে বেশি পাসের হার কারিগরি বোর্ডে ৯৪.৪১ শতাংশ।
এবার গতবারের তুলনায় মোট জিপিএ-৫ ফাইভ কমেছে ১২ হাজার ৮৮৭। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯। এবার যা ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। পাসের হার ও জিপিএ ফাইভে এগিয়ে মেয়েরা। এবারও শূন্য পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেড়ে ৫টি থেকে পৌঁছেছে ৫০টিতে।
প্রাপ্ত ফলাফলে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬২ হাজার ৪২১ জন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২১ হাজার ৮৫৫ জন। এ ছাড়া বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৭ হাজার ৩৮৬ জন। কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৯০ দশমিক ৭, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৯৯১ জন, দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ০৬ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১১ হাজার ৮৩০ জন। সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৪০ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৮৭১ জন।
চট্টগ্রামে পাশের হার ৭৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৭০ জন। ময়মনসিংহে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৩ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৭ হাজার ১৭৯ জন। যশোরে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৮ হাজার ৭০৬ জন। আর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৬ শতাংশ ও কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৯৪. ৪১ শতাংশ।
যেভাবে জানা যাবে ফল
মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২২ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে (যেমন HSC Dha 123456 2022 send to 16222)। ফিরতি এসএমএসেই ফল পাওয়া যাবে।
আলিমের ফল পেতে ALIM লিখে স্পেস দিয়ে Mad লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২২ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে HSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২২ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফল জানানো হবে।
বোর্ড জানিয়েছে, তাদের অধীন প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ফলাফল বোর্ডের ওয়েবসাইটে (www.dhakaeducationboard.gov.bd) রেজাল্ট কর্নারে ক্লিক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইআইআইএন দিয়ে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে।
আর www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটে ক্লিক করে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে।
উল্লেখ্য, সারাদেশে একযোগে ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। চলতি বছর পরীক্ষায় ২ হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন ছাত্রী।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৮২ হাজার ১৮৩ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৩০ জন। মোট ২ হাজার ৬৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থীরা ১ হাজার ৫২৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন।
অন্যদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় ২ হাজার ৬৭৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ৪৪৮টি কেন্দ্রে ৯৪ হাজার ৭৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এদের মধ্যে ৫১ হাজার ৬৯৫ জন ছাত্র এবং ৪৩ হাজার ৬৮ জন ছাত্রী।
এছাড়া এ বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) এইচএসসি (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষায় এক লাখ ২২ হাজার ৯৩১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে ৮৮ হাজার ৯১৮ জন ছাত্র এবং ৩৪ হাজার ১৩ জন ছাত্রী। ১ হাজার ৮৫৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ৬৭৩টি কেন্দ্রে তারা অংশ নেন।