ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক: ফেসবুকের মার্কেট প্লেস থেকে গাড়ি কিনতে গিয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হয়েছিলেন নিউ ইয়র্কের পুলিশ বিভাগে কর্মরত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা আদীদ ফায়াজ। হাসপাতালে তিনদিন ধরে জীবনের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মঙ্গলবার (ফেব্রুয়ারি ৭) ব্রুকলিনের ব্রুকডেইল হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ব্র্যান্ডি জোনসকে (৩৮) সোমবার সন্ধ্যায় আটক করা হয়।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইস্ট নিউ ইয়র্কের লিন্ডেন বুলেভার্ডের কাছে রুবি স্ট্রিটে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, নিউ ইয়র্কের পুলিশ বিভাগে কর্মরত পাকিস্তানি পুলিশ কর্মকর্তা আদীদ ফায়াজ (২৬) বছর বয়সী পুলিশ কর্মকর্তা আদিদ ফায়াজ ফেসবুক মার্কেট প্লেসে গাড়ি কেনার জন্য ইস্ট নিউ ইয়র্কের লিন্ডেন বুলেভার্ডে যান। কিন্তু বিক্রেতা একটি বন্দুক বের করে তার কাছ থেকে অর্থ ডাকাতির চেষ্টা করেন। তদন্তকারীরা বলেছেন, তারা বিশ্বাস করেন না যে সন্দেহভাজন ব্যক্তি জানতেন যে ভুক্তভোগী এনওয়াইপিডির সদস্য ছিলেন। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।
সূত্র জানায়, তিনি লং আইল্যান্ডের ডিয়ার পার্কের বাসিন্দা। দু’দিন ধরে চিরুনি তল্লাশি চালানোর পর পুলিশ গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ব্র্যান্ডি জোন্সকে নানুয়েটের ডেজ ইন থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭৫তম পুলিশ চত্বরে নিয়ে যায়।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ফেসবুক মার্কেট প্লেসে পোস্ট করা হোন্ডা পাইলট বিক্রির মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি অফ ডিউটি অফিসার আদিদ ফায়েজকে ইস্ট নিউ ইয়র্কে নিয়ে যান জোনস। অফিসার ফায়েজ এবং তার শ্যালক যখন উপস্থিত হন, তখন জোনস মজা করে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তাদের কাছে বন্দুক আছে কিনা। এ সময় মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে টাকা দাবি করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ফায়েজ পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে সন্দেহভাজন ব্যক্তি তাকে লক্ষ্য করে ৬ রাউন্ড গুলি করে একটি কালো অটোতে দ্রুত গতিতে চলে যায়।
অফিসার ফায়েজের শ্যালকের গাড়ির ড্যাশ ক্যামের মাধ্যমে সন্দেহভাজনের গাড়িটি সনাক্ত করে। পুলিশ জোনসকে রকল্যান্ড কাউন্টিতে ট্র্যাক করে, যেখানে তিনি তার বান্ধবী এবং পাঁচ সন্তানের সাথে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
নিউ ইয়র্কের পাকিস্তান কনস্যুলেট একটি বিবৃতিতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এনওয়াইপিডি অফিসার আদীদ ফাইয়াজের পরিবার এবং সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। তার সেবাকে সম্মান জানিয়ে তার পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতির জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে এই কঠিন সময়ে নিউ ইয়র্ক আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিউ ইয়র্কের পাকিস্তান কনস্যুলেট।