October 9, 2024 - 2:22 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeকর্পোরেট-অর্থ ও বাণিজ্যকর্পোরেট সংবাদএমসিসিআই’র প্রথম ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত

এমসিসিআই’র প্রথম ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত

spot_img

কর্পোরেট ডেস্ক: মেট্রপলিট্যান চেম্বার অফ কমার্স এণ্ড ইণ্ডাষ্ট্রী, ঢাকা (এমসিসিআই) কর্তৃক আয়োজিত বছরের প্রথম ত্রৈমাসিক মধ্যাহ্নভোজ সভা বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) চেম্বারের মতিঝিল অফিসে অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত মধ্যাহ্নভোজ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। এছাড়াও চেম্বারের সাবেক সভাপতিবৃন্দ, চেম্বারের সাবেক ও বর্তমান পরিচালকবৃন্দ, চেম্বারের সদস্যবর্গ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মধ্যাহ্নভোজ সভায় চেম্বারের সভাপতি কামান টি. রহমান তার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি বাংলাদেশে ব্যবসা সহজীকরণ ও ব্যবসার খরচ কমানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। সেই সাথে বলেন, ব্যবসা সহজীকরণে বর্তমান সরকার অনেক পদক্ষেপই গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘ওয়ান-স্টপ সার্ভিস’ চালু করা, বিদ্যমান আইনের সংস্কার ও নতুন আইন প্রণয়ন করা, বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা।

তিনি আরো বলেন, তাদের বেশ কিছু কাজ এখনো অপূর্ণই রয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে একটি নতুন কোম্পানী আইন প্রণয়ন অন্যতম। এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।

এমসিসিআই’র সভাপতি তার স্বাগত বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গৃহীত ‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ নামে নতুন কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন যে, এর মাধ্যমে সারা দেশের জেলা ও উপজেলাভিত্তিক নির্দিষ্ট বা পরিচিত পণ্যের উৎপাদন ও প্রসার ঘটবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে একদিকে যেমন পণ্যের উৎপাদন ও প্রসার ঘটবে এবং রপ্তানির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিবে, অন্যদিকে নারীর কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখবে । জনাব রহমান রপ্তানির জন্য নতুন বাজার খোঁজার কাজ অব্যাহত রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন যে, পণ্য বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার খোঁজার ব্যাপারে জোর দেন।

এমসিসিআই’র সভাপতি বর্তমান নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে বলেন, দেশের বাজারে পণ্যমূল্য নির্ভর করে থাকে যোগান ও চাহিদার ভিত্তিতে। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। এই ব্যাপারে সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে খোলাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণ করলে নিম্ন আয়ের মানুষ স্বস্তি পেতে পারে। এছাড়াও সরকার আমদানিনির্ভর পণ্যগুলোতে শুল্ক কমালে আমদানি ব্যয় কমবে। তাহলে হয়তো কিছুটা স্বস্তিদায়ক মূল্যে পণ্যগুলো বাজারে পাওয়া যেতে পারে। অধিকন্তু, তিনি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানিতে নিরুৎসাহিত করেন।

মাননীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্ব ও পরিকল্পনায় ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে দৃশ্যমান প্রভুত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার বর্তমানে ৬.০৩ শতাংশে এবং মাথাপিছু আয় ২,৭৬৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে ৪৩টি পণ্য রপ্তানিতে প্রণোদনা প্রদানের জন্য .৫% থেকে ১৫% পর্যন্ত নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও ভিশন ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে দেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।

মাননীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে তৈরী পোশাক রপ্তানি আয় ১০.৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে সেই রপ্তানি আয় ৪৬.৯৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ট্র্যাডিশনাল আইটেমের পাশাপাশি নন-ট্র্যাডিশনাল আইটেমের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বাজার বহুমুখীকরণেও সরকার খুবই আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। সরকারের বিশেষ উদ্যোগে পৃথিবীর সেরা ফ্যাক্টরিগুলো (গ্রীন ফ্যাক্টরি) অধিক সংখ্যায় এখন বাংলাদেশে অবস্থিত। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের পাশাপাশি ঔষুধ, আবাসন, জাহাজ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য শিল্পের প্রসার ঘটেছে। রপ্তানি পণ্যের তালিকায় যোগ হয়েছে জাহাজ, ঔষুধ এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী। এছাড়াও বাংলাদেশের আইটি শিল্প বহির্বিশ্বে সুনাম কুড়িয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান সময়ে গ্যাস ও বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে শিল্পখাতের স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রমে ব্যবসায়ীরা কিছুটা সমস্যার মধ্যে পড়ছেন, বিষয়টি সমাধানে সরকার কাজ করছে। আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই এর থেকে উত্তরণ ঘটবে। সরকার ১০০টি সরকারি ও বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইকোনমিক জোন) স্থাপনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, যেগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই অঞ্চলগুলোয় বিনিয়োগকারীদের জন্য কর, ভ্যাট এবং শুল্ক ছাড়ের মত বিশেষ প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে নতুন এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে।

পরবর্তীতে এমসিসিআই’র পরিচালনা পর্ষদের কয়েক জন সদস্য বক্তব্য রাখেন। সবশেষে চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব হাবিবুল্লাহ এন. করিম সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ