নিজস্ব প্রতিবেদক : ১০ মিটার গভীরতার পাশাপাশি ২০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ ভিড়িয়ে ইতিহাস গড়ল চট্টগ্রাম বন্দর। ব্রাজিল থেকে আমদানি করা ৬০ হাজার টন চিনিবাহী এমভি কমন এটলাস নামের জাহাজটি প্রধান জেটিতে ভেড়ানোর মাধ্যমে নতুন যুগে প্রবেশ করল এই বন্দর। এখন থেকে যেকোনো আকৃতির জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারবে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) কুয়াশা ভেদ করে কান্ডারি নামের ৪টি টাগবোটের মাধ্যমে বহিনোঙ্গর থেকে চিনিবাহী জাহাজ এমভি কমন এটলাস নামের জাহাজটি নিয়ে আসা হয়। সিসিটি ওয়ানে সতর্কতার সঙ্গে জাহাজ ভেড়ানো হয়। এর মাধ্যমে ১০ মিটার দীর্ঘ এবং ২০০ মিটার গভীরতার জাহাজ প্রধান জেটিতে এনে দেশের আমদানি রফতানি বাণিজ্যের ইতিহাস গড়লো চট্টগ্রাম বন্দর।
এদিন দুপুরে এ উপলক্ষে জাহাজের সামনে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
মার্শাল দ্বীপের পতাকাবাহী কমন এটলাস নামের এই জাহাজটিতে রয়েছে মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা ৩৬ হাজার টন চিনি। অবশ্য বাকি ২৪ হাজার টন চিনি বহির্নোঙরে খালাস করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে বছরে ৪ হাজারের বেশি জাহাজ আসে। ছোট আকারের জাহাজগুলো প্রধান জেটিতে ভেড়ার সুযোগ পেলেও বড় মাদার ভ্যাসেলগুলোকে বহির্নোঙরে থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পণ্য খালাস করতে হতো।
১৯৭৫ সালে সর্ব প্রথম সবচেয়ে বড় জাহাজ হিসেবে সাড়ে ৭ মিটার গভীরতা এবং ১৬০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছিল। পরবর্তীতে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ১৯৮০ সালে ৮ মিটার গভীর, ১৭০ মিটার দীর্ঘ; ১৯৯০ সালে সাড়ে ৮ মিটার গভীর, ১৮০ মিটার দীর্ঘ; ১৯৯৫ সালে ৯ মিটার গভীর ১৮৫ মিটার দীর্ঘ এবং ২০১৪ সালে সাড়ে ৯ মিটার গভীর ও ১৯০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
সর্বশেষ সোমবার ১০ মিটার গভীরতার এবং ২০০ মিটার দীর্ঘ বিশাল আকৃতির জাহাজ প্রবেশ করল। এখন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে যেকোনো আকৃতির জাহাজ অবলীলায় প্রবেশ করতে পারবে।
সাধারণ আকৃতির তুলনায় ২০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজগুলোর দ্বিগুণের বেশি কনটেইনার বহনের সক্ষমতা রয়েছে। ফলে বড় জাহাজ দিয়ে আমদানি কিংবা রফতানি করা গেলে খরচও যেমন কমে আসবে, তেমনি জাহাজ বহির্নোঙরে অবস্থান না করে বন্দরের প্রধান জেটিতে ভিড়তে পারবে। এতে গড় অবস্থানকালও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
চট্টগ্রাম বন্দর এবং বহির্নোঙরে প্রতি বছর ৪ হাজারের বেশি পণ্যবাহী জাহাজ আসছে। এসব জাহাজে ৩২ লাখ কনটেইনার এবং ১১ কোটি টন কার্গো পণ্য আসে।