নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে এতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ৯টা ৫৭ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। চলে দীর্ঘ ২৩ মিনিট। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম ও তাবলিগ জামাতের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের আহমেদ।
মাওলানা মুহম্মদ জুবায়েরের সঙ্গে লাখো মুসল্লি দুই হাত তুলে ‘আমিন’, ‘আমিন’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলেন পুরো টঙ্গী। ইজতেমার মাঠ ও আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো মাইকে সেই ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে তুরাগ নদের চারপাশের এলাকায়। মোনাজাতের সময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। টঙ্গীর আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হতে থাকে লাখো কণ্ঠের কান্নার ধ্বনি। নানা বয়সী ও পেশার মানুষ, এমনকি নারীরাও ভিড় ঠেলে মোনাজাতে অংশ নিয়ে আল্লাহর দরবারে মনের আকুতি জানিয়ে কেঁদে বুক ভাসান।
এর আগে কুয়াশা ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমা ময়দান জড়ো হন। ফজরের পর বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে প্রথম পর্বের তৃতীয় দিন। শেষ হয় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে থাকেন। মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে করোনা মহামারির সময় পেরিয়ে একত্রে আবারও সমবেত হতে পেরে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন বারবার। সকল বৈষম্য ও ভেদাভেদ ভুলে এক আল্লাহর বান্দা ও রাসুলের (সা.) উম্মত হিসেবে প্রার্থনার হাত বাড়িয়ে দেন। নবিওয়ালা জিন্দেগি গড়ে তুলতে দাওয়াতে তাবলিগের দীক্ষা নিতেই হাজির হয়েছেন এই সম্মেলনে। তারা বিশ্বকে জানাতে চান এটাই যে ইসলামের মাহাত্ম্য।
রোববার (১৩ জানুয়ারি) ফজর নামাজের পর থেকে শুরু হয় তৃতীয় দিনের বয়ান। বয়ান শুরু করেন ভারত থেকে আগত মাওলানা আবদুর রহমান। এরপর শুরু হয় হেদায়েতি বয়ান। এর দুদিন আগ থেকেই মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন। শুক্রবারের নামাজ আদায়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। রাস্তায়ও নামাজ আদায় করেন। দুদিন ধরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবিরাম চলে দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা আলেমদের বিভিন্ন ভাষায় বয়ান। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈমান, আখলাক ও দ্বীনের বিভিন্ন বয়ান শোনেন।
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম পক্ষের (জোবায়ের অনুসারী) আয়োজনে এবারের ইজতেমা। চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পক্ষের (সা’দ অনুসারী) বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন।