নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং সিটি ব্যাংক এন.এ.-এর সাথে মোট ১০০মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দীর্ঘমেয়াদী ঋণসুবিধার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
থ্রিপি দর্শন -মানুষ, পৃথিবী ও সমৃদ্ধি -এর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে গ্রীন ফাইন্যান্স প্রকল্পে অর্থায়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) অর্জনে সহায়তা করবে এই তহবিল।
জাইকা আট বছরের মেয়াদে ৯০মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করছে এবং সিটিএন.এ. দুই বছরের মেয়াদে ১০মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিচ্ছে।
এটি বাংলাদেশের যেকোন বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জাইকা’র প্রথম অর্থায়ন, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে আমাদের অগ্রযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে। ব্র্যাক ব্যাংক টেকসই খাতে বৈদেশিক অর্থায়ন নিয়ে আসতে উন্নয়ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। জাইকা‘র এই তহবিল ব্যাংকও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য টেকসই নীতিমালার অধীনে গ্রিন ফাইনান্সকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। এ তহবিল থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানির কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও দক্ষবর্জ্যব্যবস্থাপনা খাতে অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। সিটিব্যাংক এন.এ.-এর অর্থায়ন সুবিধাটি দেশের বিধিবিধান অনুযায়ী যেকোনও খাতে ব্যবহার করা যাবে।
বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে, জাইকাও সিটিব্যাংক এন.এ.থেকে প্রাপ্ত ঋণ ব্র্যাক ব্যাংককে সামগ্রিক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে। একইসাথে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সবুজ অর্থায়নে তহবিলের প্রাপ্ততা নিশ্চিত করবে।
জাইকা’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিকিও হাতায়েদা বলেন: “অর্থনীতি দ্রুত প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশে জ্বালানি ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ সরকার সবুজ অর্থায়নের জন্য একটি নতুন নীতি গ্রহণ করেছে, যাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানির কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হয়। এছাড়াও, দেশে দ্রুত নগরায়নের প্রেক্ষিতে বিশেষ করে তরল বর্জ্যব্যবস্থাপনা সম্প্রসারণ করা খুবই জরুরি।ব্র্যাক ব্যাংককে এই বিষয়গুলো সমাধানে ঋণ সহায়তা প্রদান করতে পারা জাইকার জন্য অত্যন্ত সম্মানের বিষয়, কেননা ব্যাংকটি সবুজ অর্থায়ন বাড়াতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ব্র্যাক ব্যাংক-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন— “অন্তর্ভুক্তিমূলক কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে থাকা ‘মিসিং মিডল’-দেরকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসার স্বপ্ন দেখেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিশেষ করে আমাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদ। এ স্বপ্নকল্পের কারণেই ব্র্যাক ব্যাংক সাফল্য অর্জন করেছে। থ্রিপি দর্শন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্র্যাক ব্যাংক গ্রিনফাইন্যান্সিং প্রকল্পগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ব্র্যাক ব্যাংক টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থায়নের উপর অগ্রাধিকার দেয়। পরিবেশ সংরক্ষণ ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য মূল্যবোধভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে জোর দেয়। ১০০মিলিয়ন মার্কিন ডলারের গ্রিন ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি জাইকা এবং সিটিব্যাংক এনএ’র সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের একটি যুগান্তকারী দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি।
২০০টি শাখা, ৪৫৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,০০০টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৮,৩৬৯ জন কর্মকর্তা নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকটি সারা দেশে প্রায় ১.৩ লাখ গ্রাহককে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে আসছে, যাদের মধ্যে আছে গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী নারী।