বিনোদন ডেস্ক: কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী ও মডেল শান্তা পালকে ৮ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এর আগে কলকাতার যাদবপুর থানা এলাকা থেকে বুধবার (৩০ জুলাই) কলকাতার লালবাজার গোয়েন্দা বিভাগ তাকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া তার স্বামীর বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়েছে। তিনি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে বসবাস করেন।
অভিযোগ, তার কাছে ভারতের আধার ও ভোটার আইডি রয়েছে, যেগুলোর সত্যতা নিয়ে তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশ।
জানা গেছে, অ্যাপ ক্যাবের ব্যবসা করতে গিয়েই পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন অভিযুক্ত শান্তা। বর্তমানে তিনি ৮ দিনের রিমান্ডে আছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বরিশালের মেয়ে শান্তা কলকাতার যাদবপুরের বিজয়গড়ে এক ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার সম্পর্কে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, একজন সফল বাংলাদেশি মডেল ও অভিনেত্রী ভুয়া নথি ব্যবহার করে কেন ভারতে অবস্থান করছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। শান্তার কাছ থেকে দুটি আধার কার্ড পাওয়া গেছে। তার মধ্যে একটি ২০২০ সালে বর্ধমানের একটি ঠিকানায় তাঁর নামে নিবন্ধিত। অন্যটি কলকাতার ঠিকানা দেওয়া আছে। এসব নথি কীভাবে সংগ্রহ করেছেন, সে বিষয়ে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি এই মডেল।
ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেলিং দিয়ে। জিতেছিলেন মিস এশিয়া গ্লোবাল বাংলাদেশ খেতাব। মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও তিনি কাজ করেছেন নাটক ও সিনেমায়ও। ছিলেন জনপ্রিয় কয়েকটি ব্র্যান্ডের অ্যাম্বাসেডর। অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের পাশাপাশি তেলেগু ছবিতেও। কিন্তু আলোচনায় আসার চেয়ে, সমালোচনাতেই যেন বেশি জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
২০২০ সালের দিকে ওপার বাংলার নির্মাতা রাজিব কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে হোটেলে রাত কাটানোর কুপ্রস্তাবের অভিযোগ করে আলোচনায় আসেন শান্তা। একই বছর ঢাকায় এক নাট্যনির্মাতার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনেন। এরপরের ঘটনা যেন সিনেমাকেও হার মানায়— রাতভর রমনা থানায় অজ্ঞান হওয়ার অভিনয়, চিৎকার, কান্না, থানার বাইরে গড়াগড়ি!
কলকাতায় এবার অ্যাপ ক্যাব ব্যবসার সূত্র ধরে আবার ধরা পড়ে যান পুলিশের জালে। পুলিশ জানায়, শান্তা বিভিন্ন সময় ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন। এমনকি রেশন কার্ডও নাকি রয়েছে! শুধু তাই নয়, তিনি নিজেই ঠাকুরপুকুর থানায় একবার প্রতারণার মামলা করেছিলেন— সেখানে দেয়া হয় ভিন্ন ঠিকানা।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার জানান, ২০২৩ সাল থেকে শান্তা যাদবপুরের বিজয়গড় এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থেকে বসবাস করছিলেন। তার কাছে থাকা ভারতীয় আধার ও ভোটার কার্ড আসল না নকল তা যাচাইয়ের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কোন কোন নথি দেখিয়ে তিনি ভারতের নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত এসব কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং রেশন কার্ডের সত্যতা যাচাইয়ের অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।’
পুলিশ আরও জানিয়েছে, সম্প্রতি শান্তা ঠাকুরপুরে পুলিশ স্টেশনে একটি জালিয়াতির মামলা করেন। সেখানেও তিনি ভিন্ন ঠিকানা দেন। তদন্তকারীদের মতে, তিনি বিভিন্ন সময় ঠিকানা পরিবর্তন করতেন এবং বিভিন্ন পরিচয়ে থাকতেন।
আরও পড়ুন:


