নিজস্ব প্রতিবেদক : গতকাল সোমবার (১০ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জর্জ আদালতে একটি রিট পিটিশনের আদেশের বিরুদ্ধে (রিট পিটিশন নং-৩০৯৭/২০২৫) আপিল শুনানিতে ২ নম্বর আইটেমে থাকা সিভিল মিস পিটিশন নাম্বার ১৮৮/২০২৫ শুনানির জন্য ছিল। শুনানি শেষে চেম্বার কোর্ট আপিল আবেদনটি রিজেক্ট করে নো অর্ডার দেন। ফলে ২৪-০২-২০২৫ তারিখে রিট পিটিশন ৩০৯৭/২০২৫ এর উপর দেওয়া হাইকোটের আদেশ বহাল থাকলো। অর্থাৎ মোহাম্মদ আসাদউল্লাহ, এফসিএস ফিরে পেলেন আইসিএসবির কাউন্সিল সদস্যপদ, যা ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে।
আপিল আবেদনের বাদি ছিলেন-সরকারে (সংশ্লিষ্ট উইং) এবং বিবাদী ছিলেন মোহাম্মদ আসাদউল্লাহ, এফসিএস। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন-অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ। বিবাদী পক্ষে ছিলেন-সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মো: আহসান এবং অ্যাডভোকেট মো: গোলাম কিবরিয়া, এফসিএস।
আপিল আদালতের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আশরাদুর রউফ কোর্টকে জানান, আপিল আবেদনে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এখানে ল’ পয়েন্ট না থাকায় তাদের কোন সাবমিশন নাই। আপিল কোর্ট রাষ্ট্রপক্ষকে বলেন, সিনিয়দের কাছ থেকে ভালই শিখেছেন, অত:পর আপিল কোর্ট কোন আদেশ না দিয়ে আবেদনটি বাতিল করে দেন।
ফলে ২৪-০২-২০২৫ তারিখে দেওয়া হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি আকরাম এইচ চৌধুরী এবং বিচারপতি কে.এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চের আদেশ বহাল থাকলো। ফলে ২৬-০১-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত আইসিএসবির জরুরী কাউন্সিল সভায় মোহাম্মদ আসাদউল্লাহ কাউন্সিল পদ শূণ্য ঘোষণার সিন্ধান্ত স্থগিত থাকলো। সেই সাথে বহাল থাকলো কাউন্সিল সদস্যপদ, এক্সিকিউটিভ কমিটি, স্ট্যান্ডিং কমিটি ও সাব কমিটিতে থাকা সকল পদ।
আপিল আবেদনের আদেশ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আসাদউল্লাহ, এফসিএস এর আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া, এফসিএস কর্পোরেট সংবাদকে বলেন, আপিল কোর্টের এই আদেশ আইসিএসবির ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত/রেফারেন্স হয়ে থাকলো। যা পরবর্তী প্রজম্মের কাছেও একটি দিকনির্দেশনা হয়ে থাকবে, যেনো ভবিষ্যতে কেউ আইসিএসবির কাউন্সিলে আইনের ভুল ব্যাখ্যা করে কোন পক্ষের স্বার্থসিদ্ধীর অবৈধ সিন্ধান্ত নিতে না পারেন।
অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া এফসিএস আরো বলেন, ইতিমধ্যে হাইকোর্টের আদেশের পরে সংশ্লিষ্ট সকলকে আইসিএসবির ২০২৫ সালের মেম্বারর্স ডিরেক্টরিতে মোহাম্মদ আসাদউল্লাহকে কাউন্সিল সদস্য এবং স্ট্যান্ডিং কমিটি ও সাব কমিটিতে তার সকল পদ ঠিক রেখে নতুন মেম্বারর্স ডিরেক্টরি ছাপানোর জন্য উকিল নোটিশ দিয়েছেন, যার মেয়াদও গতকাল সোমবার (১০ মার্চ) শেষ হয়েছে। এখন যদি দেখা যায় তারা মেম্বারর্স ডিরেক্টরি রি-প্রিন্ট না করে থাকে এবং মোহাম্মদ আসাদউল্লাহ, এফসিএস যদি তাকে মানহানির মামলা রুজু করতে বলেন তাহলে আগামী সপ্তাহে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দাখিল করা হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রেসিডেন্টের পদ দীর্ঘদিন শূণ্য দেখিয়ে আইসিএসবির কাউন্সিলের কার্যক্রম না চালিয়ে যত শীঘ্র সম্ভব নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার জন্য আরেকটি লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং সেটির বাস্তবায়নও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরবর্তী কাউন্সিল মিটিংয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত না হলে আইসিএসবি’র সিইও এবং এসভিপি ও প্রেসিডেন্ট ইনচার্জ এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য যে, গতকাল সোমবার (১০ মার্চ) আপিল কোর্টের নো অর্ডার আদেশের উপর বিবাদী পক্ষ মোহাম্মদ আসাদউল্লাহ, এফসিএস এর আইনজীবী অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড নাহিদ সুলতানা গতকালই ‘ল’ ইয়ার্স সার্টিফিকেট” দিয়েছেন। ফলে আইসিএসবির বর্তমান কাউন্সিল ও নির্বাচন কমিশনের জন্য উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে কোন বাধা থাকলো না, অর্থাৎ আইসিএসবির শূন্য ঘোষিত একটি কাউন্সিল পদে নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল বাতিল করে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে কোন আইনগত বাধা নেই বলে নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া, এফসিএস। তিনি আরো বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে আইসিএসবিতে মব ভায়োলেন্স প্রতিরোধ ও কাউন্সিলের সিন্ধান্ত স্থগিত হয়েছে।
এ বিষয়ে সিইও জাকির হোসেন বলেন, তিনি এরকম আদেশের বিষয়ে শুনেছেন কিন্তু মন্ত্রণালয়ে ফোন করলে তারা কোন আপিল করেননি বলে জানিয়েছেন। আর আইসিএসবির পক্ষ থেকেও কোন আপিল করা হয়নি বলে তিনি জানান।