কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে আহত ১ হাজার ৪০১ জনকে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ গেজেট প্রকাশ করে।
জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সহায়তার পরিমাণ নির্ধারণ করেছে সরকার। যেখানে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে ‘এ’ ক্যাটাগরির (অতি-গুরুতর আহত) ৪৯৩ জন ও ‘বি’ ক্যাটাগরির (গুরুতর আহত) ৯০৮ জনের নামের তালিকার গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। তবে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে (সামান্য আহত) থাকা ১০ হাজার ৬৪৮ জনের তালিকা এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
চিকিৎসার পরও যারা অন্যের সহায়তা ছাড়া জীবন যাপনে অক্ষম, সেরকম ৪৯৩ জনকে ‘অতি গুরুতর’ বিবেচনায় ‘ক’ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে।আর পর্যাপ্ত চিকিৎসার পরও শারীরিক অসামর্থ্যতার কারণে অন্যের আংশিক সহায়তায় জীবন যাপনে সক্ষম ৯০৮ জনকে ‘গুরুতর আহত’ বিবেচনায় ‘খ’ শ্রেণিতে রেখে তালিকা প্রকাশ করা হয়।
গেজেটে আহতদের মেডিকেল কেস আইডি, নাম, বাবা-মায়ের নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বিভাগ ও জেলার নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ৮৩৪ জনের তালিকা গত ১৫ জানুয়ারি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এসব তালিকা ধরে নিহতদের পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে আগামী মার্চ মাস থেকে মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা ও পরিবারের সক্ষম সদস্যদের সরকারি বা আধা সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ক্যাটাগরি এ (অতি-গুরুতর আহত): সরকারের যাচাই-বাছাই অনুযায়ী তাদের এই ক্যাটাগরিতে পড়েছেন ৪৯৩ জন। চিকিৎসার পরও তারা অন্যের সহায়তা ছাড়া জীবন যাপনে অক্ষম। এই ক্যাটাগরির ব্যক্তিরা এককালীন ৫ লাখ টাকা পাবেন।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ২ লাখ টাকা ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ৩ লাখ টাকা পাবেন। পাশাপাশি মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আজীবন চিকিৎসা সুবিধাও পাবেন। উপযুক্ত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে দেশি-বিদেশি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পাবেন। কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন সুবিধা পাবেন। তারা পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। সেটি দেখিয়ে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।
ক্যাটাগরি বি (গুরুতর আহত): এই ক্যাটাগরিতে পড়েছেন ৯০৮ জন। পর্যাপ্ত চিকিৎসার পরও শারীরিক অসামর্থ্যতার কারণে অন্যের আংশিক সহায়তায় জীবন যাপনে সক্ষম তারা।
এই ক্যাটাগরির ব্যক্তিরা পাবেন এককালীন ৩ লাখ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ১ লাখ টাকা ও ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা এবং কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি/আধাসরকারি কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। তারাও পরিচয়পত্র পাবেন এবং সেটি দেখিয়ে সরকারের বিভিন্ন সুবিধাদি পাবেন।
ক্যাটাগরি সি: যারা চিকিৎসার পর বর্তমানে সুস্থ আছেন, এরকম ১০ হাজার ৬৪৮ জনকে এই ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। তবে তাদের তালিকা এখনো গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়নি। তাদের এককালীন ১ লাখ দেওয়া হবে। মাসে ১০ হাজার টাকা ভাতা ও পুনর্বাসনের সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া তারাও পরিচয়পত্র পাবেন এবং সেটি দেখিয়ে সরকার বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।