সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: দুর্গম এড়িয়ায় নিয়মিত অফিস করা সম্ভব নয়। অতিতে কেউ নিয়মিত অফিস করেনি। সেটা আমার কাছেও ভিন্ন নিয়ম নয় বলে মন্তব্য করেছেন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডাঃ মাসুদ রানা। স্বাস্থ্যের ডিজি থেকে শুরু করে সিভিল সার্জনও বিষয়টি অবগত আছেন বলে তিনি জানান।
অনিয়মিত অফিস, ডিজিটাল কায়দায় ভূতুড়ে স্বাক্ষর, ইচ্ছেমতো কর্মস্থলে ত্যাগ, সরকারি প্রোগ্রামে অনুপস্থিতসহ বিস্তর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদ রানা বিরুদ্ধে। এর আগে খুলনা জেলার রুপসা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় থেকে মাস দুয়েক আগে বদলি হয়ে তিনি এখানে আসেন। যোগদানের পর থেকে তিনি হাতেগোনা কয়েকদিন অফিস করেছেন। বেশিরভাগ সময় থাকেন জেলার শাহজাদপুর উপজেলায়। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিজিটাল উপস্থিতির তালিকায় তার নাম রয়েছে নিয়মিত। তাঁর এ ভূতুড়ে এ স্বাক্ষর অনেকেই দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়।
নিয়মিত অনুপস্থিত ও অফিসের বেহাল অবস্থা সূত্রে সরজমিনে রোববার দিনভর উপস্থিতি থেকে তাঁকে দেখতে পাওয়া যায়নি। এদিকে সরকারি নাম্বারে কল করে বন্ধ পাওয়া গেলে ব্যক্তিগত নাম্বারে সাড়ে তিনটার দিকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অফিস শেষ করে এইমাত্র এসেছি। অফিসে না থাকায় বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বলায় তিনি এবিষয় এড়িয়ে যান এবং দেখা করতে বলেন।
অফিস ও স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, গত বছরের সর্বশেষ অফিসে আসেন ২৯ ডিসেম্বর এবং ৩১ তারিখে সিভিল সার্জন অফিসে সভা করার পর আর তাঁর দেখা মেলেনি। যোগদানের পর থেকে এভাবে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে জেলার শাহজাদপুর উপজেলা অবস্থান করেন। তাঁর শাহজাদপুর উপজেলায় চেম্বার ও স্ত্রী স্থানীয় একটি হাসপাতালের স্যাকমো পদে চাকুরি করায় তাঁর পক্ষে নিয়মিত অফিস করা সম্ভব হয় না। এদিকে অফিসের কাজ জমে থাকায় দিনের পর দিন বেকায়দা পড়তে হয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের। জরুরী প্রয়োজনে স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলে ইমেইল বা হোয়াটস অ্যাপে স্বাক্ষর দিয়ে পুনরায় স্ক্যান করে প্রিন্ট করে অফিস চালান বলে জানা যায়।
এর আগে জাতীয় মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকায় কৈফিয়ত তলব করেছিল সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল আমীন। জবাবের প্রেক্ষিতে শারিরীক অসুস্থতার বিষয়টি মিথ্যা প্রচারে ক্ষমা চেয়ে দাম্ভিকতার সাথে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ইচ্ছেমতো স্বপদে দেদার্চে অনিয়মিত অফিস চালিয়ে যাচ্ছেন বলে একাধিকসূত্রে জানা যায়। তাঁর এমন কর্মকান্ডে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে চৌহালী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ও সেবা প্রত্যাশীরা।
এদিকে মহান বিজয় দিবস উদযাপন আয়োজক কমিটির সদস্যরা জানান, জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে যদি কোন কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকে এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। তাঁর অফিসে অনুপস্থিতি ও এমন কর্মকান্ডে আমরা বিব্রত।
এসব বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন এর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।