এন জি চক্রবর্তী
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) ৪৬তম অংশ
দ্বিতীয় ভাগ।
পঁয়ত্রিশ অধ্যায়।
বছর শেষের ক্লোজিং।
৫. কপি করা: যে চিঠির উত্তর দেয়া হয়েছে সে চিঠিটি যথানিয়মে ফাইলে রাখুন। যদি আপনার উত্তরটি গুরুত্বপূর্ণ হয় তবে বহির্গামী চিঠির রেজিষ্টারে প্রয়োজনীয় নোট রাখুন ও আপনার রেকর্ড হিসাবে চিঠিটির একটি কপি রেখে দিন। গুরুত্ত্বপূর্ণ চিঠি বলতে যেমন ডকুমেন্টারী ক্রেডিট, কাষ্টমারের কাছ থেকে পাওয়া মালের প্রাপ্তি স্বীকার পত্র, ক্রেতাকে সরবরাহকৃত মালের প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ। আর যদি সবটা গুরুত্বপূর্ণ নাও হয় তবে যে অংশটি গুরুত্বপূর্ণ তার সংক্ষিপ্ত নোট রাখুন। ধরা যাক আপনি তথ্য ঘেঁটে বার করলেন যে, আমরা আপনাকে আজকের তারিখে অমুককে অমুক তারিখের চিঠির জবাবে এই এই মাল দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে চিঠিটি অমুক ফাইলে রয়েছে।
আপনার কোন চিঠিটি ডাকে দেয়ার আগে খামটি বন্ধ করুন, ঠিকানাটা স্পষ্ট করে খামের উপরে লিখুন ও আপনার অফিসের সীল মোহর লাগান যাতে যে কেউ দেখেই যেন বুঝতে পারে যে এটা কোন ব্যবসায়ীর চিঠি। যেহেতু এ প্রজাতন্ত্রের ভিত্তি ব্যবসায়ীরা তাই আপনার চিঠিটি যথোচিত গুরুত্ব পাবে।
একইভাবে কোন কার্ডিনাল যদি চিঠি লেখেন তবে খামের উপরে কার্ডিনাল অভিধাটি সবসময় থাকে। ফল এই হয় যে, তাতে কেউ বলার সাহস করবে না যে চিঠিটি যে গুরুত্বপূর্ণ তা সে জানত না। পোপও একইভাবে পাঠানো খামে তাঁর বিশেষ সীলটি দেন। সেন্ট পিটারের সীলটি পোপ সম্পর্কীত যাবতীয় চিঠির উপরে থাকে বলে ওটাকে সহজেই চেনা যায়।
৬. ফাইলিং: নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে মাস বছর ধরে এ ফাইলে চিঠি জমতে জমতে ভরে উঠতে থাকবে। এভাবেই আপনি আপনার সমস্ত চিঠিগুলো ফাইলবন্দী করুন যাতে প্রয়োজনের সময় হাতের কাছেই আপনি নির্দিষ্ট চিঠিটি পেয়ে যান। মনে হয় আমি কি বলতে চাইছি তা আপনি ধরতে পেরেছেন।
৭. ডকুমেন্টারী ক্রেডিট: ১৭নং অধ্যায়ে যেভাবে বলেছি ঠিক সেভাবে আপনার বাকিতে সমস্ত কেনা বেচার ফলে উদ্ভুত দেনাদার পাওনাদারদের সংগে সম্পাদিত চুক্তি নিরাপদ জায়গায় রাখুন। অন্যকে প্রদত্ত অর্থের রশিদ যতেœ রাথুন ও অন্যের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থের রশিদের একটি রেজিষ্টার রাখুন।
৮. অনুসৃত নীতি বা পদ্ধতিসমূহের লিখিতরুপ ও অন্যনা ডকুমেন্ট: ব্যবসায়ের দালাল সম্পর্কিত নীতি, নোটারী দলিল, পাঠানো বা গৃহীত মালের কনসাইনমেন্টওয়ারী দলিলাদি, কাষ্টম ডকুমেন্টস্, আদালতের রায়, আইনগত ও সমজাতীয় অন্যন্য দলিলাদি একইভাবে সযতেœ সংরক্ষণ করুন।
আপনার উকিলের সংগে যা যা যোগাযোগ পত্রের মাধ্যমে হয়েছে সেগুলোসহ উকিলের সংগে পরবর্তীতে কি কি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করবেন বলে স্থিব করেছেন তার নোট রাখুন যাতে পরে ভুলে না যান। রাতে ঘুমানোর আগে একবার নোটবইটি একনজর দেখে নিন যাতে পরের দিন তা মনে পড়ে। কিকি কাজ করতে হবে বা কিকি মাল পাঠাতে হবে ইত্যাদি তার একটা তালিকা করতে পারলে ভাল।
ওই তালিকার যে কাজটি সারা হলো তা কেটে দিন, তারপর যা থকবে তা শেষ করার বাকি থাকল আর তার সংগে যোগ হলো নুতন করনীয়। এরপর প্রতিবেশি কাউকে আপনার পাত্র, তৈজসপত্র, ছোটখাট যন্ত্রপাতি ধার দিলে যাতে সেগুলো পরে ফেরত আনার সুবিধা হয় তার জন্য তা তালিকায় যোগ করুন। কোন্ কোন্ ডকুমেন্টগুলো ফাইলে রাখবেন বা ফাইলিং পদ্ধতি কি হবে বা করণীয়ের তালিকায় কিকি রাখবেন আপনিই সেটা ঠিক করুন। আপনার প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী সর্বোত্তম রীতিটি বেছে নিতে পারেন। সমস্ত আইটেমের সাকুল্য তালিকা তো দেয়া সম্ভব নয়। আগেও যেমনটি বলেছি, ’আইনে ডক্টরেট পাওয়ার চেয়ে একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়া বেশি কঠিন’।
আমার দেওয়া বিস্তারিত বিবরণ আপনি সযত্নে অনুসরণ করুন। আমি নিশ্চিত যে আপনি সফল তীর্থ যাত্রির মতই সফল হবেন।
(পরবর্তী কিস্তির জন্য আগামী শনিবারের সংখ্যা দেখুন)