পুঁজিবাজার ডেস্ক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের টাকা না পেয়ে গত অক্টোবরে কর্মবিরতি শুরু করেন। দেড় মাস পর বেতন পরিশোধের পর শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চিঠির জবাবে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) কোম্পানিটি জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছে।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়া ও জগদীশপুর চা বাগানসহ ১২ টি চা বাগানে নিয়মিত শ্রমিক রয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার। গত ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এনটিসির পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় চা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি, রেশন ও মাসিক বেতন। এভাবে ৬ সপ্তাহ কাজ করে শ্রমিকেরা। অত:পর গত ২১ অক্টোবর কর্মবিরতি শুরু করে ১২ টি চা বাগানের শ্রমিকরা।
শ্রীমঙ্গল বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে গত ১ ডিসেম্বর সংকট নিরাসনে ত্রিপাক্ষীয় বৈঠকে ছয় সপ্তাহের বকেয়া মজুরির মধ্যে দুই সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ ও অবশিষ্ট বকেয়া মজুরি আগামী বছর মার্চের মধ্যে কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে দুই সপ্তাহের মজুরি পেয়ে শ্রমিকরা ১০ ডিসেম্বর কাজে যোগ দেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের সমাপ্ত বছরের কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে -৯৬.২৪ টাকা যা ২০২২ সালে ছিল -৩৪.৪৭ টাকা, ২০২১ সালে ছিল -৩১.৬৮ টাকা, ২০২০ সালে ছিল -৫৫.৭১ টাকা ও ২০১৯ সালে ছিল ২০.৬৭ টাকা। উল্লেখ্য ৩০ জুন ২০২৪ সালের সমাপ্ত বছর ও প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই -সেপ্টেম্বর) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেনি।
কোম্পানির গত ৫ বছরের শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ২০২৩ সালের -৪৮.১৯ টাকা যা ২০২২ সালে ৪৮.৭৯ টাকা, ২০২১ সালে ছিল ৮৪.২৭ টাকা, ২০২০ সালে ছিল ১১৬.৭৫ টাকা ও ২০১৯ সালে ছিল ১৭৪.৬৬ টাকা।
লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০২২ সালে নগদ ৭.৫ শতাংশ, ২০২১ সালে নগদ ১০ শতাংশ, ২০২০ সালে নগদ ৫ শতাংশ, ২০১৯ সালে নগদ ২২ শতাংশ ও ২০১৮ সালে ২২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। উল্লেখ্য যে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি ন্যাশনাল টি।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, কোম্পানিটি ২৫ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ১৯৭৯ সালে তালিকাভূক্ত হয়েছে। কোম্পানির বর্তমান পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১১ কোটি ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার ১ কোটি ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৪ টি।
ডিএসই’র তথ্য অনুযায়ি ৩০ নভেস্বর ২০২৩ ইং তারিখে উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে রয়েছে ৩২.১৫ শতাংশ শেয়ার, সরকারের কাছে রয়েছে ২.৫৯ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে ১২.২২ শতাংশ শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে ৫৩.০৪ শতাংশ শেয়ার ।
৩০ জুন ২০২৩ সমাপ্ত বছরে কোম্পানির শর্ট টার্ম লোন ১৮৮ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। লং টার্ম লোন ৮৭ কোটি ৮৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা। একই সময় রিসার্ভ অ্যান্ড সারপ্লাসে ছিল (-)৩৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
গত বছর কোম্পানিটির শেয়ার দর উঠানামা হয়েছে ১৭৭.২০ টাকা থেকে ৫২৯ টাকার মধ্যে। গতকাল সমাপনি দর ছিল ১৯৮ টাকা। আজকের ওপেনিং ছিল ২০০ টাকা। ১৯৭৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে কোম্পানিটি বর্তমানে জেড ক্যাটাগরির অবস্থান করছে।