মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি: যশোরের শার্শা উপজেলা ডিহি ইউনিয়নের সাড়াতলা-বেলতা সড়কের পন্ডিতপুর ও বেলতা গ্রামের মধ্যবর্তী মৌতার বাঁওড়। বাঁওড় দু’পাড়ের প্রায় ২শ ফুট দূরত্বের মধ্যে রয়েছে পাকা রাস্তা। ডিহি ইউনিয়নের বেলতা গ্রামের সাথে সংযুক্ত পার্শবর্তী ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের বিষহরি গ্রাম। এই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের সহজ ও দু’পাড়ের স্থানীয় কৃষকের মাঠের ফসল বাড়িতে আনা নেওয়ার একমাত্র মাধ্যম এ বাঁওড়। এলাকাবাসীর দাবির দীর্ঘদিনেও এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় চলাচল ও মাঠের ফসল মালামাল আনা নেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কয়েক বছর আগে স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় বাঁওড়ের উপর একটি বাঁশ-কাঠের সাঁকো তৈরি করা হয়। দীর্ঘদিনের ভাঙ্গাচোরা দুর্বল সাঁকোটিও চলতি বছর সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে। ফলে সড়কটি ব্যবহারে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
সরেজমিন জানা যায়, জনগুরুত্বপূর্ণ মৌতার বাঁওড়ের উপর স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় যাতায়াত ও ফসল আনা নেওয়া সহজীকরণে ৪-৫ বছর আগে বাঁশ ও কাট দিয়ে একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয়। প্রতিদিন কোনরকম শতশত মানুষ, ছোট ছোট যানবাহন চলাচল এবং বাঁওড়ের দুই পাড়ের স্থানীয় কৃষকের মাঠের ফসল মালামাল আনা নেওয়া করা হচ্ছিল। কিন্তু চলতি বছর শেষের দিকে অতিবৃষ্টির পানিতে বাঁওড়টিতে প্রবল স্রোত প্রবাহে সাঁকোটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ে। ফলে বর্তমানে সাড়াতলা-বেলতা সড়কের মৌতার বাওড়ের এ সাঁকোটি ব্যবহারে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী ও পথচারী বলেন, এখানে একটি ব্রিজ না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দূরদূরান্তে যাতায়াতে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক আবু তাহের ও গোলাম হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন সাঁকোটি বেহাল অবস্থায় থাকলেও কারোর কোন মাথা ব্যাথা নেই। পন্ডিতপুর গ্রামের মাঠ থেকে কৃষি পণ্য আমাদের অনেক কষ্ট করে ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে নিয়ে আসতে হয়। এখন সাঁকো নষ্ট হওয়ায় পানির উপর দিয়ে কৃষি পণ্য কলা গাছের ভেলায় করে আনতে গিয়ে পানিতে নষ্ট হচ্ছে। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত একটা ব্রিজ নির্মাণের দাবি করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক মো: ইদ্রিস আলী জানান, সাড়াতলা-বেলতা সড়কটি শার্শা ও পাশের উপজেলা ঝিকরগাছা সংযুক্ত। দুই উপজেলার অনেক মানুষ, ছোট ছোট যানবাহন ও কৃষকের উৎপাদিত ফসল এই সড়টির পন্ডিতপুর-বেলতা গ্রামের মৌতার বাওড়ের উপর স্থানীয়দের নির্মিত বাঁশ-কাটের সাঁকো ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছিলেন। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে সেটি সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। এখানে দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মুকুল জানান, সেতু নির্মাণের সব কাগজপত্র উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে নিয়ে ঢাকা এলজিআরডি দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছিল। প্রকল্প পরিচালক দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু হবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন দেখছি না।
শার্শা উপজেলা প্রকৌশলী সানাউল হক জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ বেলতা খালে সেতু নির্মাণে ২০২০ সাল থেকেই প্রস্তাবনা পাঠানো হচ্ছে। এখন এটা টেন্ডারের অপেক্ষায় রয়েছে। খালের উপর ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়নের আশা করেন তিনি।