সাব্বির মির্জা, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: পরের জমি লিজ নিয়ে কখনো ধান, কখনো গম, ভুট্টা আবার কখনো সবজি চাষ করে তেমন লাভের মুখ দেখতে না পেলেও এবার এলাকায় প্রথমবারের মত ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন জাতের আখ চাষ করে সফল হয়েছেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর এলাকার আমানত হোসেন নামের এক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা।
এক বিঘা জমি থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছেন তিনি। এতে খরচ বাদে তার লাভ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। তার এমন সফলতা দেখে আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। ২৯ বছর বয়সী ওই তরুণ কৃষি উদ্যোক্তার বাড়ি তাড়াশ পৌরসভার দক্ষিণ সোলাপাড়া এলাকায়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইনের রঙ কিছুটা কালো খয়েরি। দেশীয় আখের মত হলেও রয়েছে বেশকিছু ভিন্নতা। এ আখের কান্ড নরম, রসের পরিমাণ ও মিষ্টি বেশি। লম্বায় সাধারণত ১২ থেকে ১৬ ফুট হয়ে থাকে। জৈব সার আর গোড়ায় পানি রাখলেই দ্রুতই বেড়ে ওঠে। কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। তুলনামুলক কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন এ জাতের আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
সরেজমিনে তাড়াশ পৌরসভার দক্ষিণ সোলাপাড়া মাঠে কৃষি উদ্যোক্তা আমানত হোসেনের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে বর্ষাকালীন রোপা আমন ধানের মাঝে এক বিঘা জমিতে শোভা পাচ্ছে ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন জাতের লম্বা আখ। এ জমির প্রায় ৯০ শতাংশ আখ ইতোমধ্যে বিক্রি করেছেন তিনি।
উদ্যোক্তা আমাতন হোসেন বলেন, আমার নিজের কোন জমি নেই। তিন বছরের জন্য ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে আখের চাষ করেছি। সেই হিসেবে প্রতি বছর ২২ হাজার টাকা লিজ খরচসহ অন্যান্য খরচ হয়। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার আখ বিক্রিয় করেছি। এতে খরচ বাদে আমার আয় হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। এখনো ১৫ হাজার টাকার আখ বিক্রির আশা করছি।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আখ চাষের জন্য উপজেলায় তুলনামুলক এ ফসল চাষের চাহিদা কম। এবছর এ উপজেলায় ৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ সবসময়ই কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করছে। আমরা আশা করছি, আখ চাষিরা লাভবান হবেন।