কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: ‘ফ্যাসীবাদী সরকারের পতনের পরে অর্ন্তর্তিকালিন সরকার অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন লক্ষ্য কাজ শুরু করলেও সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে অগ্নিমূল্যের বাজারে এখনো কোনো সংস্কার কার্যক্রম চোখে পড়ছে না কেন’ প্রশ্ন রেখে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ শীর্ষ নেতৃদ্বয় বলেছেন, ‘বাজার সিন্ডিকেট এখনো ভাঙছে না কেন ? স্বৈরাচারী সরকারের বিদায়ের পর কিছুদিন সিন্ডিকেটের প্রভাব না থাকার কারণে নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমেছিল। কিন্তু, এখন আবারো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজার সিন্ডিপকেটের হাতে বন্দি হয়ে গেছে। দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অনেক কিছু বদলালেও, উল্টোচিত্র বাজারে। চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটে হয়েছে কেবল মুখবদল। ফলে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী মূল্যএখনও পকেট কাটছে ভোক্তাদের।’
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘বাজারে চাল, ডিম, আলু, মাছ, মাংস, ব্রয়লার মুরগি, শাক-সবজিসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের মূল্য পূর্বের মতোই সিন্ডিকেটের কারণে বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। ফ্যাসীবাদী ও স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর অর্ন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম দুই টাকা থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধিকে স্বাভাবিক বলা যায় না। চালের দাম বাড়লে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের আয়ের সিংহভাগই ব্যয় হয় চাল কিনতে।’
তারা বলেন, ‘সরকার পতনের পর অর্ন্তর্র্বতী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে সেইসঙ্গে চাঁদাবাজ ও অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও বর্তমানে বাজারে গেলে তার কোন পদক্ষেপের দৃশ্য পরিলক্ষিত হয় না। দেশবাসীর মনে করছে বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে যে বাজার সিন্ডিকেটের কথা বলা হতো, ক্ষমতার পালাবদলের পরেও সিন্ডিকেটের সেই প্রভাব পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে। পূর্বের মতোই পণ্যবাহী ট্রাককে চাঁদা দিতে হচ্ছে। এতে পণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাজারে পণ্য এলে কারসাজি করে মোবাইলে খুদে বার্তার মাধ্যমে সারাদেশের ব্যবসায়ীদের কাছে ইচ্ছেমতো বাড়তি দাম জানিয়ে দেয়া হয়। এসবই সিন্ডিকেটের অপতৎপরতার এক একটি অংশ।’
ন্যাপ নেতৃদ্বয় আরো বলেন, ‘আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণার পরেও বাজারে এর প্রতিফলন দৃশ্যমান হচ্ছে না। বিগত সরকারের আমলে সিন্ডিকেট ভাঙার কথা বারবার বলা হলেও সেসব খবরে কর্ণপাত করা হয়নি। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে – নতুন সরকার আসার পরেও সাধারণ অল্প আয়ের মানুষের সীমিত ক্রয়ক্ষমতাকে জিম্মি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা এ ধরনের মুনাফালোভী জোট বা সিন্ডিকেট করার সুযোগ পাচ্ছে কী করে? এখন তো ব্যবসায়ীদের মদদপুষ্ট দলীয় সরকার ক্ষমতায় নেই। তাহলে এই বাজার সিন্ডিকেটের ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়? ’
তারা বলেন, ‘বাজার সিন্ডিকেটের মূলোৎপাটনের জন্য দরকার একটি টেকসই ব্যবস্থা। মনে রাখতে হবে বাজার সিন্ডিকেটের শেকড় অনেক গভীরে। অনিয়ম, মজুতদারি, একচেটিয়া কারবারি এবং বাজারকে অস্থিতিশীল করার মতো নেপথ্য শক্তি-অপশক্তি ক্রিয়াশীল রয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। শুধু কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে বৈঠক করলেই দায়িত্ব শেষ হবে না। প্রতিটি নিত্যপণ্যের চাহিদা ও সরবরাহ নিয়ে কে কোথায় কীভাবে কারসাজি করছে, গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে সেসব ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক তথ্যানুসন্ধান প্রয়োজন।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘কোনো পণ্যের দাম ব্যবসায়ী ইচ্ছে করলেই বৃদ্ধি করতে না পারে, মজুতদারিও করতে না পারে এবং প্রত্যেক পণ্যের মূল্য সরকার এমনভাবে নির্ধারণ করবে তাতে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত সকলেরই লাভের অংশ নির্ধারিত থাকে। কারোরই লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। সে জন্য দ্রুততম সময়ে দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণের সকল প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে বাজার কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব বিলীন ও বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে স্থিতিশীল হতে পারে। আর নিত্যপণ্যের সহনীয় মূল্যই পারে মানুষকে স্বস্তি দিতে, অন্য কিছুতে নয়।’