আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ সদরের আড়াই’শ বেড হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ১৬ দিন যাবৎ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক নেই। ফলে সমন্বয়ের অভাবে অনেক গুরুত্বপুর্ন দাপ্তরীক কাজ আটকে যাচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে ছুটি নিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন ঝিনাইদহ আড়াই’শ বেড হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম। গত ১৯ আগষ্ট তার ছুটি শেষ হলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় নতুন করে তত্ত্বাবধায়কের পদে কাউকে পদায়ন করেনি। এতে হাসপাতালটির দেখভাল করার কেউ নেই।
জানা গেছে, ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মদদ দেওয়া, হাসপাতালের খাবার ও কেনাকাটায় দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং টেন্ডারবাজীর অভিযোগ এনে গত ৯ সেপ্টম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলামকে ১০ দিনের ছুটিতে পাঠাতে বাধ্য করেন। কিন্তু ছুটি শেষ হলেও ছাত্রদের বাধার মুখে তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম নিজ কর্মস্থলে ফিরতে পারেনি। অন্যদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন করে কাউকে এই পদে পদায়নও করেনি।
এদিকে সাময়িক দায়িত্বে থাকা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি তাকে একদিকে যেমন শিশু ওয়ার্ড সামলাতে হচ্ছে, তেমনি পাঁচ শাতাধীক কর্মকর্তা কর্মচারীকে দেকভাল ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিতে পারছেন না। তত্ত্বাবধায়কের মতো প্রশাসনিক পদে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন আইন বহির্ভুত হলেও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম অনেকটা ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র মতো দশা হয়েছে।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন হাসপাতালে ইনডোর ও আউটডোরে রোগী বাড়ছে। বর্তমান আড়াই’শ বেডের হাসপাতালটিতে ১৩২ জন শিশু, ১০২ জন পুরুষ ও ৩৩৭ জন নারী রোগী ভর্তি রয়েছে। রোগীর চাপে চিকিৎসকরা কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। তত্ত্বাবধায়ক না থাকায় কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে।
ঝিনাইদহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু হুরায়রা জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পদে খুব শীঘ্রই নতুন কাউকে দিতে পারে বলে জানতে পেরেছি। হয়তো দুই একদিন সময় লাগতে পারে। বিষয়টি নিয়ে তত্ত্বাবধায়কের পদে সাময়িক দায়িত্বে থাকা শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম জানান, তিনি শিশু ওয়ার্ড সামলাবেন নাকি প্রশাসনিক কাজ করবেন।
তিনি বলেন দ্রুত তত্ত্বাবধায়ক পদে নিয়োগ না দিলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠতে পারে।
এ বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মনজুরুল মুরশিদ জানান, বিষয়টি স্বাস্থ্য সচিবকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। হয়তো দ্রুতই তত্ত্বাবধায়ক পদে নতুন কাউকে পদায়ন করা হবে।