ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সংক্ষিপ্ত বৈঠকে, দুই নেতা বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ককে দৃঢ়করণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশের তরুণদের সমর্থন করার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিপ্লবের সময় এবং পরে ছাত্র এবং তরুণদের আঁকা দেয়ালচিত্রের একটি আর্ট বই ‘দ্য আর্ট অফ ট্রিউস্ফ’ উপহার হিসেবে দেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, ড. মুহামম্দ ইউনূস নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কাছে বইটি হস্তান্তর করেন। বইটিতে জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্রদের নেতৃত্বে চলাকালে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য শহর ও নগরের দেয়ালে তরুণ শিক্ষার্থীদের আঁকা সেরা কিছু শিল্পকর্মের ছবি স্থান পেয়েছে।
ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি সংশ্লিষ্টদের এই আর্টবুক প্রকাশের নির্দেশ দেন।
তরুণ চিত্রশিল্পীদের আঁকা ও লেখায় ঢাকা সারা দুনিয়ার গ্রাফিতি রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পায়। দেয়ালগুলো পরিণত হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের বিশাল ক্যানভাসে। সরকারকে নানা শক্তিশালী বার্তা দিতে তারা বিভিন্ন সৃজনশীল ও হৃদয়গ্রাহী স্লোগান ও কবিতা লিখেছে। এসব বার্তা যেন বিপ্লবের চেতনা ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার শিল্পিত প্রতিফলন। ছাত্ররা দেশবাসীর সমর্থন আদায়ে শিল্পকর্মের মাধ্যমে মুক্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল।
ছাত্রদের মনের মাধুরী মিশিয়ে দেয়ালে দেয়ালে ফুটিয়ে তোলা স্বপ্ন-বাসনার এসব নান্দনিক ও নজরকাড়া চারুকলা গোটা ঢাকা শহরের চেহারা পাল্টে দেয়। এর মধ্যে অনেক গ্রাফিতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। প্রশংসা কুড়ায় সর্বস্তরের মানুষের।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রবিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস সফররত মার্কিন প্রতিনিধিদলকেও এই আর্টবুক উপহার দিয়েছিলেন। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাদের হাতে এ উপহার তুলে দিয়েছিলেন তিনি। সূত্র-বাসস।
ট্রুডো দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণে কানাডার সহায়তার বিষয়ে আশ্বাস দেন। এসময় ড. ইউনূস বিগত শাসনব্যবস্থা কীভাবে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে তা বর্ণনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কানাডা সরকারের সমর্থনের জন্য কানাডার প্রশংসা করেন। তিনি কানাডাকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আরও ভিসা দেওয়ার অনুরোধ জানান।