কর্পোরেট ডেস্ক : বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজধানী ঢাকায় জাতিসংঘ ঘোষিত ‘বিশ্ব শান্তি দিবস-২০২৪’ উদযাপন করেছে দেশের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন খাতের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ।
শনিবার (২১ সেপ্টেস্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে স্থাপিত ‘শান্তির স্তম্ভ’-এর সামনে বেলুন ও শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা উড়িয়ে দিবসের শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক।
শোভাযাত্রাটি কার্জন হলের সামনে থেকে শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব মোড়ে এসে শেষ হয়। পরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা আয়োজন করে জেএমআই গ্রুপ। এতে অংশ নিয়ে বক্তারা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার সুখ শান্তি অর্জনে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি দিবস পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। সাম্য আর সম্প্রীতির বিশ্ব গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে জেএমআই গ্রুপ বাংলাদেশে বিশ্ব শান্তি দিবস পালন করে আসছে। উদার মানসিকতা নিয়ে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে শান্তি এবং নিরাপত্তার মৌলিক অধিকারসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে প্রতিবছর ঐক্যবদ্ধ হই আমরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, শান্তি শুধু একটি শব্দ নয়, এটি একটি জীবনদর্শন। যে স্বপ্ন একজন শান্তিকামী মানুষ দেখে, আমি সেই স্বপ্নকেই বাস্তবায়ন করতে চাই আমার কর্মের মাধ্যমে। আমার প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ জন্মলগ্ন থেকেই মানবতার সেবায় নিবেদিত। বিগত ২৫ বছর ধরে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল শান্তি ও মানবতার পক্ষে। আজ আমরা গর্বিত যে, জেএমআই গ্রুপ দেশের অন্যতম বৃহত্তম শিল্প পরিবার হিসেবে স্বীকৃত, যেখানে ৪৩টি প্রতিষ্ঠানে আট হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবিক মূল্যবোধের প্রসার ঘটাতে হবে। আমরা ভবিষ্যতেও মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাব, যাতে আমাদের দেশ ও বিশ্ব শান্তির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. জাবেদ ইকবাল পাঠান বলেন, ‘জেএমআই পরিবারের প্রতিটি সদস্য জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব শান্তি দিবসের প্রতিপাদ্যকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। শান্তি কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য নয়, এটি সমগ্র মানব জাতির অধিকার। শান্তি মানে শুধু যুদ্ধের অনুপস্থিতি নয়, বরং মানবিক অধিকার ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব শান্তি দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, শান্তির জন্য প্রয়োজন সাম্য, সুবিচার, এবং পারস্পরিক সম্মানবোধ। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমাদের উচিত একে অন্যকে সহযোগিতা করা, ত্যাগ ও ভালোবাসার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া। আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাগুলোর মাধ্যমেই আমরা বৃহত্তর শান্তির পথে এগিয়ে যেতে পারি।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অবঃ) মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস এন্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম এবং জেএমআই বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
জেএমআই গ্রুপের প্রশাসন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল ফারুকীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন উইন্ডো মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শরীফুল ইসলাম, জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডে জাপানের নিপ্রো কর্পোরেশন মনোনীত পরিচালক হিরোশি সাইতো এবং জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক অভিজিৎ পাল।
উল্লেখ্য, বিদেশিদের সাথে যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা জেএমআই গ্রুপে বর্তমানে রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, তুরষ্ক ও থাইল্যান্ডের সাথে যৌথ বিনিয়োগ। জেএমআই গ্রুপের ৪৩টি প্রতিষ্ঠানে আট হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়োজিত আছেন। জাপানের নিপ্রো কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে জেএমআই গ্রুপ। পাশাপাশি দেশজুড়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি চাহিদা পূরণে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি করে বাজারজাত করছে জেএমআই।