অনলাইন ডেস্ক: আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে শুধুমাত্র একটি সিগারেটে আপনার শরীরের কী ক্ষতি হতে পারে? এমনকি একটা সিগারেটের পাফও শরীরের বিভিন্ন সিস্টেমকে নষ্ট করতে পারে, শ্বাসযন্ত্র থেকে এমনকী ত্বকের স্বাস্থ্য পর্যন্ত। আমরা সবাই জানি যে ধূমপান আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সিগারেটের ধোঁয়া শ্বাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এতে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থগুলো আপনার শ্বাসনালীতে থাকা আস্তরণকে জ্বালিয়ে দেয়, যার ফলে সেগুলো কুঁচকে যাওয়ায় শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
একটি সিগারেটের পাফ মূহুর্তের মধ্য়ে আপনার জীবনে যে বিপদগুলো ডেকে আনতে পারে-
কার্ডিভাসকুলার প্রভাব
একটি সিগারেটের পাফ আপনার হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালীগুলোও ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সহ্য করে। নিকোটিন, যে পদার্থটি সিগারেটকে আসক্ত বানায়, তা আপনার রক্ত প্রবাহে দ্রুত প্রবেশ করে, যার ফলে আপনার হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পায়। এই স্পাইক আপনার ধমনীতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, আপনার রক্তচাপ বাড়াতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
অক্সিজেনের মাত্রার উপর প্রভাব
দেখে মনেই হতে পারে যে একটি সিগারেট এমনকী ক্ষতি করতে পারে? কিন্তু এটাই আপনার জীবনে ডেকে আনবে মহাবিপদ, কেড়ে নিতে পারে অক্সিজেন গ্রহণ করার ক্ষমতা। সিগারেটে ধোঁয়ায় থাকা কার্বন মনোক্সাইড অক্সিজেনের চেয়ে আপনার লোহিত রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিনের সাথে আরও সহজে মিশে যায় ফলে শরীরে পরিস্রুত রক্তের চেয়ে দূষিত রক্তের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
মস্তিস্ক ও নার্ভের (স্নায়ুতন্ত্রের) সমস্যা
সিগারেট পান করলে শুধু শারীরিক ক্ষতি হয় তা-ই নয়, এর থেকে মস্তিস্ক ও নার্ভ-ও দুর্বল হয়ে যায়। নিকোটিন থেকে ডোপামিন নামক একটি নিউরোট্রান্সমিটার বের হয়, যা ক্ষনিকের আনন্দ এবং সাময়িক “বাজ্” বা আরামের অনুভূতি দেয়।
মুখের স্বাস্থ্য-কে নষ্ট করে
একটি মাত্র সিগারেট ধূমপানও আপনার মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তামাক ধোঁয়ায় থাকা রাসায়নিক পদার্থ আপনার মুখ এবং গলার সূক্ষ্ম টিস্যুকে নষ্ট করতে পারে, যার ফলে খারাপ শ্বাস এবং মাড়ির রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ধূমপান আপনার দাঁতকে দাগযুক্ত করে এবং মৌখিক ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
ত্বকের সৌন্দর্য হারিয়ে যায়
সবাই নিজের ত্বকের যত্ন নেওয়ার কতরকম উপায় খোঁজে কিন্তু একটি সিগারেট খাওয়ার পরই আপনার সেই যত্নশীল ত্বকের স্বাস্থ্যের পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারেন। তামাক ধোঁয়ার বিষাক্ত পদার্থ ত্বকে রক্তপ্রবাহকে কম করে দেয়, যা প্রয়োজনীয় পুষ্টি ত্বকে পৌঁছাতে পারেনা এবং অক্সিজেনের অভাবে ত্বককে দূষিত করে। এর ফলে অকাল বার্ধক্য দেখা দিতে পারে, যেমন বলিরেখা, সূক্ষ্ম রেখা এবং ম্লান ত্বক। ধূমপান ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ এবং সোরিয়াসিসকে বাড়িয়ে তুলতে পারে, যার চিকিৎসা করা পরে আরও কঠিন হয়ে ওঠে।
সূত্র-জিনিউজ।