বগুড়া প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের আন্দোলনের গিয়ে রিপন ফকির নামক এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১০৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আরো ২০০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিহতের স্ত্রী মাবিয়া বেগম বগুড়া সদর থানায় এ মামলাটি করেন। বগুড়ায় এ নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৬টি হত্যা ও একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের হলো। রিপন ফকির গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে বগুড়া শহরের ২ নম্বর রেল গেট ঝাউতলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদ, সাবেক অতিরিক্ত যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাত, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) বগুড়া প্রতিনিধি এএইচএম আক্তারুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, সাবেক এমপি ডা. মোস্তাফা আলম নান্নু, সাবেক এমপি রেজাউল করিম বাবলু, আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মোহন, যুবলীগ নেতা মো. আমিনুল ইসলাম, মো. আব্দুল মতিন সরকার, টি জামান নিকেতা, রফি নেওয়াজ খান রবিন, আসাদুর রহমান দুলু, যুবলীগ সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, মো. সামছ উদ্দিন শেখ হেলাল, সুলতান মাহমুদ খান রনি, আব্দুল মান্নান আকন্দ, আনোয়ার হোসেন রানা, হেলাল উদ্দিন কবিরাজ, হাসিবুল হাসান সুরুজ, সাবেক এমপি ও জাতীয় পার্টি নেতা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত জিয়াউল হক মোল্লাসহ ১০৪ জন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, রিপন ফকির গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে তিনি ছাত্র-জনতার সাথে আন্দোলনে যোগ দেন। তারা মিছিল নিয়ে সাতমাথায় যাওয়ার সময় শহরের ঝাউতলা এলাকায় গেলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ হুকুমের আসামিদের নির্দেশে অপর আসামিরা মিছিলটি ঘেরাও করে। এরপর তারা লাঠিসোঁটা, কাটা রাইফেল, রিভলভার, চাইনিজ কুড়াল হাতে নিয়ে পেট্রোল বোমা, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। এ সময় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে রিপন ফকির রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকে। পরে রিকশাযোগে রিপন ফকিরকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করে। পরে মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দাফন করা হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ।