নিজস্ব প্রতিবেদক : অবশেষে পদত্যাগ করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ কমিশনার। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন প্রধান নির্বচান কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমিসহ নির্বাচন কমিশনের সবাই পদত্যাগের জন্য মনস্থির করেছি। পদত্যাগের কাগজপত্র সচিবের কাছে জমা দিয়েছি। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে সেগুলো জমা দেবেন।’
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। ২০২৪ সালের নির্বাচন দলভিত্তিক নয়, ২৯৯ আসনে প্রতিযোগিতা হয়েছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক। এসময় তিনি আরও বলেন, নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজাতে হবে। এর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খালা বাহিনীকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
সিইসি বলেন, ২০২৪-এর নির্বাচন ২৮ দল অংশগ্রহণ করলেও প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ও তাদের সমমনা দল অংশ নেয়নি। তাই নির্বাচন সেই অর্থে অন্তর্ভুক্তি হয়নি। তাদের একাধিকবার নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিকভাবে আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এটি তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিলো।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন স্থগিত বা বাতিলের সাংবিধানিক কোনো ভিত্তি ছিল না। সে কারণে অনেকে কমিশনকে দোষারোপ করছেন। নির্বাচন কি কারণে, কখন স্থগিত করা যাবে তা সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। অতীতে কোনো নির্বাচন কমিশন নির্বাচন বাতিল করে পদত্যাগ করেনি।
তিনি বলেন, যে উদ্দেশ্যে বিপ্লব হয়েছে আমরা সকলে চাই সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হোক। দেশে যথাযথ সংস্কার আসুক।
সংবাদ সম্মেলন শেষে ইসি সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলে জানিয়েছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান ও মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। তবে অপর দুই নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা ও মো. আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলেও তা স্পষ্ট করেনি কমিশন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। এছাড়া, ইসির সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও সাবেক সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।
তারা নিয়োগের একদিন পর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে শপথ নেন। ওই কমিশনের অধীনেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনটি বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বর্জন করে। ভোট শেষে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।