কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) এর উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, পোশাক কারখানায় যারা ভাঙচুর করছে তারা শ্রমিক না, বহিরাগত। শ্রমিক বাঁচাতে, অর্থনীতি বাঁচাতে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বহিরাগতদের এ ভাঙচুরের কারণে দেশের ৫০ লাখ শ্রমিকের কষ্ট হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে তৈরি পোশাক শিল্প খাত ও শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে এক জরুরি বৈঠক শেষে হাসান আরিফ সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান ও শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, ‘চারদিকে যে শ্রমিক অসন্তোষ হচ্ছে, তা নিয়ে আজ আমরা বৈঠক করেছি। আমরা খবর পাচ্ছি যে প্রকৃত শ্রমিক যারা, তারা কেউ নিজের বাড়ি পোড়াবেন না, কারণ এখানে তার জীবিকা। এটা বহিরাগতরা এসে করেছে।’
শ্রমিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা (শ্রমিকরা) বাধা দেন, আপনারা বাধা দিলে আমরাও আপনাদের সঙ্গে থাকব। এমনভাবে তারা মিশে আছে যে, তাদের সেগরিগেট (আলাদা) করা ডিফিকাল্ট (কঠিন) হয়ে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি ও শ্রমিকদের রক্ষায় কঠোর অবস্থান নেওয়া’
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্রকৃত শ্রমিকরা এ ধরনের কোনো বিশৃঙ্খলা করছেন না। যেখানে তার জীবিকা, সেখানে সে (শ্রমিক) ধ্বংস করবে না। আপনারা খেয়াল করে থাকবেন, যেগুলো ভাইব্রেন্ট (গুরুত্বপূর্ণ) কারখানা, কুমিল্লায় প্রাণ কোম্পানির কারখানা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাণ কোম্পানিতে কোনোদিন শ্রমিক বিশৃঙ্খলা ছিল না। কিন্তু এই কোম্পানি যেহেতু দিনকে দিন বিশ্ব ছেয়ে ফেলছে, তাহলে এটা যদি নষ্ট হয়, তাহলে এ খাতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে রেখেছি, সরকার কোনো সময় তার নাগরিকের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ করবে না, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, কারখানা, শ্রমিক ও দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে গেলে কিছু সংখ্যকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সে ব্যাপারে আমাদের আলোচনা হয়েছে।’
কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ‘সে বিষয়ে আরও চিন্তাভাবনা করতে হবে। তারা গ্রেপ্তার কিংবা আটক হতে পারেন। পঞ্চাশ জন রাস্তায় বসে পড়লে পাঁচ লাখ মানুষের অসুবিধা হবে। কাজেই তাদের সরাতে যদি বলপ্রয়োগ করতে হয়, লাঠিপেটা করতে হয়, জলকামান ব্যবহার করতে হয়, আমরা সেটা করবো।’
এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আন্দোলন যেটা হচ্ছে তাদের নেতারাও এর প্রকৃতিটা বুঝতে পারছে না। সংগঠকরা বুঝতে পারছে না। যারা আন্দোলন করছে, তাদের দাবি দাওয়া সুনির্দিষ্ট নয়। বিভিন্ন জায়গায় বহিরাগতরা আছে। হেলমেট পড়া টোকাই, যারা ভাড়াটে তাদের দেখা যাচ্ছে, তারা ভাঙচুর করছে। আজ থেকে শিল্পাঞ্চলে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী অ্যাকশন নেবে। রাস্তা খালি করা হবে। আজ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার শুরু হবে।