এন জি চক্রবর্তী
দ্বিতীয় ভাগ।
তেইশ অধ্যায়। (২৮তম অংশ)
একমালিকি কারবারের হিসাব।
একটা দোকান ও তার মালিকের হিসাব কিভাবে রাখতে হবে।
এমন যদি হয় যে, আপনার একটি দোকান আছে আর তাতে কেবল আপনার বাসা থেকে যা যা মাল পাঠান তাইই শুধু বিক্রী হয়, তাহলে দোকানের হিসাবটি আলাদা করুন যাতে দোকানের লাভ লোকসান আপনি বুঝতে পারেন। এভাবে আপনার বাড়ি থেকে পাঠানো মালের জার্নালটি হবে:
মনে মনে ভাবুন যে, দোকানটি আপনার নয়। তার আলাদা সত্বা রযেছে। তাই একই সংগে একত্রে ও আলাদা আলাদাভাবে দ্রব্যসমূহের হিসাব আপনার খাতায় রাখুন।
আর দোকান থেকে যা ফেরৎ আসে তার জন্য বিপরীত এন্ট্রি দিন।
এভাবে যে কোন তারিখে আপনার দোকানের কি অবস্থা, ভালো কি মন্দ, তা বুঝতে পারবেন। আর এভাবেই আপনি আপনার দোকানটি আরো ভালোভাবে কি করে চালাতে পারেন তার প্রয়োজনীয় তথ্য আপনি পেয়ে যাবেন। দোকানের ম্যানেজারের সংগে কোন রকম আলাপ আলোচনা না করেই কোন কোন দোকানের মালিক ’দোকানে পাঠানো দ্রব্যসমূহ’ কে ডেবিট বা ক্রেডিট না করে তার পরিবর্তে ’দোকানের ম্যনেজার’কে করেন। কারো সংগে কথা না বলে তাকে দেনাদার বা পাওনাদার সাব্যস্ত করা উচিৎ না। আর আপনি যদি তাইই করেন, তবে বাজারে ফালতু হিসাব রাখার জন্য আপনার বদনাম হবে।
বাড়ি থেকে দোকানে আসবাবপত্র পাঠালে দোকান বা ম্যানেজার (সম্মতি থাকলে) হিসাবকে ডেবিট করুন। উদাহরণ হিসাবে ধরুন বাজারে আপনার একটা অষুধের দোকান রয়েছে। সেক্ষেত্রে ল্যাবরেটরী সরঞ্জামকে আসবাবপত্র বোঝাবে। দোকানের ম্যানেজার তার প্রাপ্ত সরঞ্জাম ইনভেন্টরী হিসাবে খাতায় তুলবে এবং দোকানের খাতায় এ লেনদেনের জন্য প্রয়োজনীয় এন্ট্রি দেবে। দোকানটি যা আপনার পক্ষ থেকে আপনার ম্যানেজার বা কর্মচারী দেখভাল করে সেটার হিসাব আলাদা রাখলে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য পাবেন। আর আপনি যদি আপনার দোকান নিজে চালান তাহলে তো কথাই নেই। মনে করুন, দোকানটি ছাড়া আপনার আর কোন আয় রোজগার নেই এবং যা মালামাল আপনার দোকানে বিক্রী হয় সে সব মালই আসে আপনার বাড়ি থেকে। তারপরও যেভাবে বল্লাম সেভাবে আপনার হিসাবটি রাখুন। নগদে যদি মাল কেনেন, তবে দোকানের খাতায় সংশ্লিষ্ট মালকে ইনভেনিাট্র হিসাবে ডেবিট আর নগদ হিসাবকে ক্রেডিট করুন।
এরপর যখন যখন দোকানের জিনিষপত্র খুচরায় ১০/২০ টাকায় নগদে বিক্রী হবে, বিক্রির টাকাগুলো একটা ছোট বাক্সে জমাবেন। বারবার এন্ট্রি না দিয়ে, নির্দিষ্ট সময় ধরুন, এক সপ্তাহ পরপর বাক্সের টাকাগুলো বার করে গুনুন এবং নিচের মত নগদকে ডেবিট আর দোকানে পাঠানো দ্রব্যসমূহ হিসাবকে ক্রেডিট করুন:
উপরে যেভাবে উদাহরণ দিয়ে বলা হলো তাতে মনে হয় আপনি আপনার দোকানের জন্য আলাদা হিসাব রাখতে পারবেন। এখন নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন আপনাকে কিভাবে কি করতে হবে। আপনার দোকানের অবস্থাটা কি রকম, লাভলোকসান কি হলো না হলো, সেটা যেভাবে আপনি বুঝতে পারেন হিসাবটা ঠিক সে অনুযায়ী রাখতে হবে। কথায় বলে, ’জ্ঞানহীন ব্যবসায়ী আর অন্ধ বাদুরের মধ্যে কোন তফাৎ নেই’।
যেকোন ব্যবসায়ের আর্থিক তথ্যাদি জানা থাকলে তবে ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে থাকে। প্রয়োজন মনে করলে ব্যবসায়ী আরো সংশ্লিষ্ট তথ্য যোগ করতে পারেন, তবে যা বললাম তাতে মোটের উপর কাজ চলে যাবে। (চলবে)