ব্যাংক এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আরফান আলী। তিনি সম্প্রতি সুইফট মেম্বার অ্যান্ড ইউজার গ্রুপ অব বাংলাদেশের নতুন চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি এক সাক্ষাৎকারে ব্যাংকিং খাতে সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন।
প্রশ্ন: সাম্প্রতিক সময়ে আইটি নিরাপত্তার বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। ব্যাংকিং খাতে এ চ্যালেঞ্জ কতটুকু?
মো. আরফান আলী : ব্যাংকিং খাতে তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটিতে অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে অনেক বাকিও আছে। ব্যাংকগুলো প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখনো কঠিন। এই ঝুঁকি নিতে হবে। আইটির কারণে সেবা দিতে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হয়। তাই ঝুঁকি নিয়েও এগিয়ে নিতে হবে আইটির ব্যবহার। এটি বাদ দিয়ে চলা যাবে না। এড়াতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে।
প্রশ্ন : আইটি নিরাপত্তায় করণীয় কী?
মো. আরফান আলী : আইটি নিরাপত্তায় বর্তমানে প্রটেকশন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। হ্যাকারদের সঙ্গে সিকিউরিটিও শক্তিশালী হয়েছে। প্রতিদিনই নিত্যনতুন পদ্ধতি ও কৌশলে সাইবার আক্রমণ হচ্ছে। সেটা প্রতিহত করতে প্রতিষ্ঠানগুলো সক্ষমতা অর্জন করছে। কর্তৃপক্ষকে মানবসম্পদ ব্যবস্থায় নিবিড় পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ব্যবস্থাপনা ঝুঁকি থাকবে, তবে ভয় পেয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকা ঠিক হবে না।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ ব্যাংকে হামলার পর ব্যাংকগুলো কতটুকু সতর্ক হয়েছে?
মো. আরফান আলী : রিজার্ভ চুরির মতো ঘটনায় বর্তমানে ব্যাংকগুলো আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক। সুইফট তার ব্যবহারকারীদের যেসব নির্দেশিকা দিয়ে থাকে, তা পুরোপুরি মেনে চললে ঝুঁকির আশঙ্কা কম থাকে।
প্রশ্ন : বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ কী?
মো. আরফান আলী : সামনের দিনে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে। এর সঙ্গে ব্যাংকের অর্থায়ন জড়িত। দেশি-বিদেশি ঠিকাদার বিনিয়োগ করছে। সবকিছুই আসছে ব্যাংকের মাধ্যমে।
প্রশ্ন : অর্থপাচার রোধে ব্যাংকগুলোর করণীয় কী?
মো. আরফান আলী : পাচার রোধে ব্যাংকের বড় ভূমিকা আছে। কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে। দেশের সম্পদ কোনোভাবেই বাইরে চলে যেতে দিতে পারি না।
প্রশ্ন : ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের কারণে সৃষ্ট সংকট সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
মো. আরফান আলী : খেলাপি ঋণ কমাতে হলে সর্বপ্রথম ব্যবসায়ী ও ব্যাংকারের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রয়োজন। যারা ব্যাংকের উদ্যোক্তা তারাই আবার ব্যবসায়ী। জনগণের আমানতের টাকা ঋণ হিসেবে নিচ্ছেন তারা। খেলাপি ঋণ বেড়ে গেলে উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোনো ব্যবসায়ী হয়তো লাভবানও হন। খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি একবার শুরু হলে, সেটা ধীরে ধীরে বড় আকার ধারণ করে।
আমাদের সময়