November 25, 2024 - 8:20 pm
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeনির্বাচিত কলামইনট্যানজিবল এ্যাডিশন

ইনট্যানজিবল এ্যাডিশন

spot_img

১ম অংশ

এনজি চক্রবর্তী: অক্সফোর্ড এ্যডভান্সড লার্ণার্স ডিক্সনারি বলছে ইনট্যানজিবল হচ্ছে, ’(ব্যবসার ক্ষেত্রে) অস্তিত্ব না থাকলেও যা (কোম্পানীর কাছে) মূল্যবান’। আর এ্যাডিশন হচ্ছে ’কোন কিছুর সংগে অন্য কোন কিছু যোগ করা’। তাহলে ’ইনট্যানজিবল এ্যাডিশন’ বলতে বোঝায় ’অস্তিত্ব না থাকলেও যা ব্যবসার ক্ষেত্রে মূল্যবান তারমূল্য অন্য কোন কিছুর সংগে যোগ করা’। হাতের কাছের সহজবোধ্য উদাহরণ হচ্ছে ব্যবসার ’সুনাম’ বা ’গুড উইল’।

কিন্তু আজ আমরা যে ’ইনট্যানজিবল এ্যাডিশন’ নিয়ে কথা বলব তা ভিন্ন রকমের কিছু। করদাতা-কোম্পানীর প্রদর্শিত লাভ (লোকসানও হতে পারে) আর কর কর্মকর্তার স্থিরীকৃত লাভের পার্থক্যকে হিসাবরক্ষকেরা আর কর উকিলেরা ’ইনট্যানজিবল এ্যাডিশন’ হিসাবে বুঝে ও বুঝিয়ে থাকেন। এ পার্থক্য থাকবেই এমন কোন কথা নেই, তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে থাকাটাই স্বাভাবিক। তা থাকুক, তাতে কার কি এসে গেল। উপর্উেপরে বলা যায় বটে, তবে মোদ্দা কথাটা হলো ’এসে যায়’। আর এই এসে যায় বলেই আয়কর বিষয়ক ’আইএএস-১২’ মাথা খাটিয়ে বার করেছে যে এ পার্থক্যের কারণ দুটি। তার একটি ’সাময়িক’ আর অন্যটি ’স্থায়ী’ যা ২১.০৮.২৩ তারিখের ’কর্পোরেট সংবাদে ’’বিলম্বিত কর: বালাদেশ প্রেক্ষিত’ নামে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং নুতন করে আর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলার প্রয়োজন দেখছিনা।

তবে সংক্ষেপে হল এই যে, সাময়িক পার্থক্য হলো কর কর্মকর্তা এবছর যে সমস্ত খাতের খরচ কম ধরে বা আয় বেশী ধরে দিয়ে কোম্পানীর লাভ বাড়িয়ে দিলেন, পরের বছর আইনানুগভাবেই সে সমস্ত খরচ বা আয় যাইই হোক লাভের সাথে সমন্বয় হয়ে য়াবে। উদাহরণ- অবচয়ের হার বা পদ্ধতিগত ভিন্নতা, বছর শুরু ও শেষে দেনাদার পাওনাদার থাকার ফলে প্রদর্শিত বিক্রী ও কেনার ফলে প্রাপ্ত বা প্রদত্ত অর্থের পরিমানের ভিন্নতা, ইনভেন্টরী ভ্যালুয়েশনের পদ্ধতিগত ভিন্নতা ইত্যাদি। আর প্রদর্শিত ও স্থিরীকৃত লাভের মধ্যে এমন কোন কারণে যদি সে পার্থক্য হয় যেটা ভবিষ্যতে কখনো দূর হবেনা বা সমন্বয়ও হবে না তবে তা হচ্ছে স্থায়ী পার্থক্য। আইএ্এস এর কথা হচ্ছে তুমি হিসাবরক্ষক সেটা তুমিও যেমন আগে থেকেই জান তেমনি কর কর্মকর্তাটিও জানেন যেহেতু দুজনের কেউই আইনের বাইরে যেতে পারেনা। তাই বাবা হিসাবরক্ষক তুমি হিসাব করে বার কর এই স্থায়ী পার্থক্যের কারণে উদ্ভুত কর পার্থক্য নিয়মিত কর অংকের সাথে যোগ বিয়োগ করে সমন্বয় করে সেটা লাভ ক্ষতি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত কর।

কিন্তু ঘটনা যদি এমন হয় যে, আইনেও লেখা নেই আবার আগে থেকে হিসাবরক্ষকের পক্ষে অনুমান করাও অসম্ভব তেমন কোন কারণে যদি স্থায়ী পার্থক্য হয় তবে বেচারা হিসাবরক্ষক যাবে কোথায়? বাংলাদেশে তাহরহামেশা ঘটে চলেছে। উদাহরণ হিসাবে প্রদর্শিত লোকসান মানার তো প্রশ্নই উঠে না, এমনকি ’বিগত বছরের নথির আলোকে’ গ্রস লাভ বা বিক্রি কমতেও পারবেনা যদিও আইনে তা বলা নেই। তাই হিসাবরক্ষকের খাতায় লাভ লোকসান যাইই থাকুক কর কর্মর্তার খাতায় লোকসান নামে কোন পদার্থের অস্তিত্ব ’লাখে না মিলল এক’। বরং তুলনামূলকভাবে লাভের পাল্লা ভারি। এমন পার্থক্য পৃথিবীর কোথাও ঘটে কিনা জানি না আর তাই যারা আইএএস/আইএফআরএস তৈরি করেছেন তাঁদের মাথায়ও আসেনি, আসবার কথাও নয়। তবে আমরা এ পার্থক্যকে নিরসনের জন্য উপায় বার করেছি। তার নাম দিয়েছি ’ইন্ট্যানজিবল এ্যডিশন’।
বিগত সর্বোচ্য চার কর বছরের চূড়ান্ত কর দায় নির্ধারণের পর উক্ত আদেশ প্রাপ্তি ও দায় পরিশোধ সাপেক্ষে পঞ্চম কর বছরের হিসাবে লাভ বা ক্ষতির পার্থক্যকে ’ইন্ট্যানজিবল এ্যডিশন’ হিসাবে একদিকে সম্পদ (সাধারনত ’নগদ’) হিসাবে অন্যদিকে পুঞ্জিভুত লাভ হিসাবকে বাড়িয়ে দিতে পারেন। তবে এ বিষয়ে হিসাব রক্ষক ও কর আইনজীবিদের মধ্যেও বিভ্রান্তির য়েছে। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর বিটিডি অক্টোবর ১৯৭৮ প্রকাশিত (ভলিউম ৬, পাতা-৩৩) সার্কুলার টি হুবহু দেয়া হল:

“Admissibility of intangible addition”
Sub-section 2A of Section 4 of the Income Tax Act, 1922 deals with ‘Unexplained introduction of capital’. This sub-section empowers the Deputy Commissioner of Taxes to treat the unexplained cash credit of the assesse as his income of that year in which that cash was credited in the capital account of the assesse.
We would like to discuss at length the implication of the above provision of law arises as a result of the difference between the amount of gross profit shown by the assesse and that what would be the treatment of that amount of money (by) which (the) amount of gross profit taken by the D.C.T. when the D.C.T. takes the Proviso to section 13 of the Income Tax Act, in other words, when the Trading Account of the assesse is fully or partially rejected. To put it in another way how the assesse can account for in his books of account the difference between the quantum of gross profit shown by him and that of arrived at by the D.C.T. The difference is ‘intangible addition’ in the Trading Account of the assesse. He is to pay tax on this amount as it is added in the computation of his total income.
When the assesse pays tax for his intangible addition it is fair that he should get some benefit in the form of introduction of fresh capital. This fresh capital becomes available to him as a result of an operation of law. He can only get benefit when he knows that it is available to him. It becomes available to him from the date of its creation irrespective of any number of years or there should be any limitation from the date of assessment order of the relevant creation assessment year. The question now arises whether the assesse should get benefit of all intangible additions. The question was considered by the then Central Board of Revenue and the Board decided that the assesse should be allowed the benefit of intangible additions of four years. Its intention was intimated by Circular No. 11 of 1954. We are reproducing below the entire Circular No. 11 of 1954:
Circular no. 11 of 1954
It has come to the notice of the Board that income tax officer raises the quantum of gross profit on the ground that a portion of the income concealed from the account books but when in subsequent year some cash credit is discovered, no allowance is made for the intangible addition made in the earlier years. This practice entails hardship in as much as the same income comes to be taxed over again. The Board, therefore, direct that in a case where additions for concealed profits have been made in any year and a cash credit is discovered in some later year, the income tax officer should carefully examine the case and reduce the amount of addition on account of the cash credit to the extent of intangible additions, if any, made in the earlier year’s assessments. In doing so, he should not, however, go back more than four years earlier to the previous year in which the cash credit has been discovered. Where the assesse represents that the income tax officer should go further (years), he should be told that the reduction has been made as a matter of concession and that the income tax officer is not bound in law to make any reduction whatsoever.
That Circular is still valid as the National Board of Revenue has neither withdrawn nor amended that Circular.
We have come across many cases in which in spite of the above clear instruction, assessing officers are adding u/s 4 (2B), although it might be 4 (2A) as income from undisclosed source if the intangible additions of four years are found credited in the Capital Account of the assesse. Sometimes, the D.C.T.s do not allow the full account (amount) of the admissible intangible additions but deduct some portion of that allowable sum for what they call: ‘low drawings of the assesse’. This is a clear violation of the aforesaid Circular. This causes unnecessary harassment to the assesse and results in time consuming appeals. This has an adverse effect on the revenue.
For the sake of justice and Govt. revenue, we hope that the National Board of Revenue would issue instructions to the assessing officers to strictly follow the Circular No. 11 of 1954.” ( আগামীতে ২য় অংশ সমাপ্য)

লেখক: গবেষক কোম্পানি ল, পেশাদার হিসাববিদ ও সহ প্রতিষ্ঠাতা, আইসিএসবি।

আরও পড়ুন:

বিলম্বিত কর : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ ছাড়া বকেয়া বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠান কি অসম্ভব?

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ

নগদ লভ্যাংশ পাঠিয়েছে ওয়ালটন

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি গত ৩০ জুন,২০২৪ অর্থবছরের ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রেরণ করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে...

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৪০৯তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি. এর পরিচালনা পর্ষদের ৪০৯তম সভাআজ (২৫ নভেম্বর) সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। পর্ষদের চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে সভায় ব্যাংকের...

এসবিএসি ব্যাংকের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : এসবিএসিব্যাংক পিএলসি. মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়। এতে অতিথি আলোচক...

একনেক সভায় ৬০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রায় ৫ হাজার ৯১৫ কোটি ৯৯ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৫টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। সোমবার...

বোর্ড সভার তারিখ জানাল ৪ কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৪ কোম্পানি ডিভিডেন্ড-ইপিএস ঘোষণা সংক্রান্ত বোর্ড সভার তারিখ জানিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানি ৪টি...

ডিএসইতে সূচকের পতনে লেনদেন বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২৫ নভেম্বর) মূল্যসূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। কমেছে...

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে

তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দু'দিন ধরে বিরাজ করছে চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। সোমবার (২৫শে নভেম্বর) সকাল ৬টা ও ৯টায় এখানে দেশের সর্বনিম্ন...

চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জোন এবং খাতুনগঞ্জ ও আগ্রাবাদ কর্পোরেট শাখার ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংক...