October 9, 2024 - 2:22 pm
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeকর্পোরেট-অর্থ ও বাণিজ্যঅর্থ-বাণিজ্যশুল্কবৃদ্ধির প্রতিবাদে ভারতের বৃহত্তম পেঁয়াজের বাজার বন্ধ

শুল্কবৃদ্ধির প্রতিবাদে ভারতের বৃহত্তম পেঁয়াজের বাজার বন্ধ

spot_img

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: পেঁয়াজের উর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার (১৯ আগস্ট)  শুল্ক ৪০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। তবে সরকারি ঘোষণার প্রতিবাদে ‘ভারতের পেঁয়াজের ভাণ্ডার’ নামে পরিচিত মহারাষ্ট্রে বিক্ষোভ শুরু করেন কৃষকরা। তাদের ধারণা এতে করে পেঁয়াজের ব্যাপক দরপতন হবে। তাদের বিক্ষোভের কারণে দুই দিন ধরে বন্ধ রয়েছে এশিয়ায় পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার লাসালগাঁওসহ প্রায় সব পাইকারি বাজার। ভারতের কৃষক ও কৃষিপণ্যের পাইকারি বিক্রেতাদের সংগঠনগুলোর জোট এগ্রিকালচার প্রডিউস মার্কেট কমিটিজ-এর (এআইএমসি) ডাকে এই ধর্মঘটে যান মহারাষ্ট্রের কৃষক ও কৃষিপণ্য বিক্রেতারা। খবর দ্য লাইভ মিন্ট। শনিবার (১৯ আগস্ট)  কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির শুল্ক ৪০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এ সংক্রান্ত এক সরকারি প্রজ্ঞাপণে বলা হয়, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বর্ধিত শুল্ক কার্যকর থাকবে। 

সংকট নিরসনে মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গয়াল সরকারিভাবে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ‘ঐতিহাসিক মূল্যে’ পেঁয়াজ কেনার আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দেন। মন্ত্রী বলেন, চলতি মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কুইন্টাল (১০০ কেজি) পেঁয়াজ ২ হাজার ৪১০ রুপিতে (৩ হাজার ১৭৮ টাকা)  কিনে নেবে সরকার। গত বছর এই দর ছিল ১ হাজার ২০০ রুপি (১ হাজার ৫৮২ টাকা)।

তবে কৃষকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন কি না— এখনও জানা যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের অধিকাংশ পাইকারি বাজারে কেনা-বেচা বন্ধ দেখা গেছে।

পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে চীন, দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। প্রতি বছর ২ কোটি ৪০ লাখ টন পেঁয়াজের উৎপাদন হয় দেশটিতে। উৎপাদিত এই পেঁয়াজের অর্ধেকই আসে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলা থেকে। এ কারণে পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটি ‘ভারতের পেঁয়াজের ভাণ্ডার’ নামেও পরিচিত। এবং মহারাষ্ট্র ভারতের পেঁয়াজের ভাণ্ডার নামে পরিচিত। দেশটির মোট উৎপাদিত পেঁয়াজের অর্ধেকই আসে পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যটি থেকে।

কৃষিজাত এই ফসলটির চাহিদাও ভারতে প্রচুর। সবজি এবং মসলা— উভয় হিসেবেই এটি অপরিহার্য দেশটির প্রায় সব রাজ্যে। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পর মোট উৎপাদনের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বিদেশে রপ্তানি করে ভারত। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এই সবজি বা মসলাটি দ্রুত পচে যায় এবং হিমাগারে নিজেদের পেঁয়াজ সংরক্ষণের সুবিধা দেশটির অধিকাংশ কৃষকের নেই।

ভারতে গ্রীষ্ম ও শীত— দুই মৌসুমেই চাষ হয় পেঁয়াজ। গ্রীষ্মকাল, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাসে যে ফসল ওঠে, তা দিয়ে দেশটির মোট পেঁয়াজের চাহিদার ৬৫ শতাংশ মেটে।

কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, খুচরা পর্যায়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে এটিও একটি।

তবে রোববার থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে অংশ নেওয়া কৃষকরা ভারতীয় বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) জানিয়েছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের লাভবান হবেন মূলত বড় কৃষক ও আড়ৎদাররা, অন্যদিকে ভয়াবহ লোকসান গুণতে হবে মাঝারি ও প্রান্তিক কৃষকদের।

কারণ, রপ্তানি শুল্ক আরোপের কারণে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় সবই বিক্রি হবে অভ্যন্তরীণ বাজারে। বড় কৃষক ও আড়ৎদাররা হিমাগারে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারলেও মাঝারি ও প্রান্তিক কৃষকদের অধিকাংশই সেই সুযোগ পান না।

এক কৃষক বলেন, ‘গত বছরও এই পরিস্থিতি হয়েছিল। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০ রুপিতে কিনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল; কিন্তু সেই সুবিধা ভোগ করেছিল বড় কৃষকরা। অনেক ছোট কৃষককে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৮ থেকে ২০ রুপিতে বিক্রি করতে হয়েছে।

কর্পোরেট সংবাদ/এএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ