November 23, 2024 - 4:34 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeধর্ম ও জীবনজুমার দিন যেসব আমল করতে বলেছেন নবীজি

জুমার দিন যেসব আমল করতে বলেছেন নবীজি

spot_img

অনলাইন ডেস্ক : জুমার দিন বা শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। ইসলামে এ দিনটির মর্যাদা ও তাৎপর্য অনেক। ফজিলতের কারণে জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়ে থাকে। জুমার দিনের আমল সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য হাদিস গ্রন্থগুলোতে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

হাদিসে এসেছে, এ দিনের একটি সময়ে আল্লাহ তায়ালা বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না। এদিনের যে কোনও নেক আমল অন্য দিনের চেয়ে আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে :

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِي لُبَابَةَ بْنِ عَبْدِ الْمُنْذِرِ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ “‏ إِنَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ سَيِّدُ الأَيَّامِ وَأَعْظَمُهَا عِنْدَ اللَّهِ وَهُوَ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ يَوْمِ الأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ فِيهِ خَمْسُ خِلاَلٍ خَلَقَ اللَّهُ فِيهِ آدَمَ وَأَهْبَطَ اللَّهُ فِيهِ آدَمَ إِلَى الأَرْضِ وَفِيهِ تَوَفَّى اللَّهُ آدَمَ وَفِيهِ سَاعَةٌ لاَ يَسْأَلُ اللَّهَ فِيهَا الْعَبْدُ شَيْئًا إِلاَّ أَعْطَاهُ مَا لَمْ يَسْأَلْ حَرَامًا وَفِيهِ تَقُومُ السَّاعَةُ مَا مِنْ مَلَكٍ مُقَرَّبٍ وَلاَ سَمَاءٍ وَلاَ أَرْضٍ وَلاَ رِيَاحٍ وَلاَ جِبَالٍ وَلاَ بَحْرٍ إِلاَّ وَهُنَّ يُشْفِقْنَ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ ‏”‏ ‏.‏

অর্থ : হজরত আবূ লুবাবা ইবনু আবদুল মুনযির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি (সা.) বলেছেন, জুমার দিন হলো সপ্তাহের দিনসমূহের নেতা এবং তা আল্লাহ্‌র নিকট অধিক সম্মানিত। এ দিনটি আল্লাহ্‌র নিকট কুরবানির দিন ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে অধিক সম্মানিত। এ দিনে রয়েছে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য- এ দিন আল্লাহ আদম (আ.) কে সৃষ্টি করেন, এ দিনই আল্লাহ তাকে পৃথিবীতে পাঠান এবং এ দিনই আল্লাহ তার মৃত্যু দান করেন। এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোনো বান্দা তখন আল্লাহ্‌র নিকট কিছু প্রার্থনা করলে তিনি তাকে তা দান করেন, যদি না সে হারাম জিনিসের প্রার্থনা করে এবং এ দিনই কেয়ামত সংঘটিত হবে। নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ, আসমান-জমিন, বায়ু, পাহাড়-পর্বত ও সমুদ্র সবই জুমার দিন শঙ্কিত হয়। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)

জুমার দিনে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী মুসলিম উম্মাহর করণীয় বিশেষ কিছু আমল রয়েছে। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।

ফজরের নামাজে সুরা সিজদা ও ইনসান তেলাওয়াত :

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الْجُمُعَةِ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ ‏(‏الم * تَنْزِيلُ‏)‏ السَّجْدَةَ وَ‏(‏هَلْ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ‏)‏

অর্থ : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (স.) শুক্রবার ফজরের নামাজে (الم * تَنْزِيلُ‏السَّجْدَةَ) এবং (‏هَلْ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ) সূরা আস-সিজদা এবং সুরা আল-ইনসান তিলাওয়াত করতেন। (সহিহ বুখারি: ১০৬৮)

বেশি পরিমাণে দরুদ পড়া :

حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيهِ قُبِضَ وَفِيهِ النَّفْخَةُ وَفِيهِ الصَّعْقَةُ فَأَكْثِرُوا عَلَىَّ مِنَ الصَّلاَةِ فِيهِ فَإِنَّ صَلاَتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَىَّ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلاَتُنَا عَلَيْكَ وَقَدْ أَرِمْتَ يَقُولُونَ بَلِيتَ ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ حَرَّمَ عَلَى الأَرْضِ أَجْسَادَ الأَنْبِيَاءِ ‏”‏ ‏.‏

অর্থ : আওস ইবন আওস (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন : দিনসমূহের মধ্যে জুমার দিনই সর্বোৎকৃষ্ট। এই দিনই আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয় এবং এই দিন তিনি ইন্তেকাল করেন। ওই দিনে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। ওই দিন সমস্ত সৃষ্টিকুল বেহুশ হবে। অতএব তোমরা ওই দিন আমার উপর অধিক দুরূদ পাঠ করবে, কেন না তোমাদের দুরূদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার দেহ তো গলে যাবে। এমতাবস্থায় আমাদের দুরূদ কিরূপে আপনার সম্মুখে পেশ করা হবে? তিনি বলেন, আল্লাহ জাল্লা জালালুহু আম্বিয়ায় কিরামের দেহসমূহ মাটির জন্য (বিনষ্ট করা হতে) হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ: ১০৪৭)

গোসল করা :

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ مَنْ أَتَى الْجُمُعَةَ فَلْيَغْتَسِلْ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ وَالْبَرَاءِ وَعَائِشَةَ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏

অর্থ : সালিম (রহ.) তার পিতা (ইবন উমর) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি জুমায় উপস্থিত হবে সে যেন গোসল করে নেয়। (জামে তিরমিজি : ৪৯২, ইবনু মাজাহ : ১০৮৮)

সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করা :

حَدَّثَنَا عَلِيٌّ، قَالَ حَدَّثَنَا حَرَمِيُّ بْنُ عُمَارَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، قَالَ حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ سُلَيْمٍ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ أَشْهَدُ عَلَى أَبِي سَعِيدٍ قَالَ أَشْهَدُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الْغُسْلُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ، وَأَنْ يَسْتَنَّ وَأَنْ يَمَسَّ طِيبًا إِنْ وَجَدَ ‏”‏‏.‏ قَالَ عَمْرٌو أَمَّا الْغُسْلُ فَأَشْهَدُ أَنَّهُ وَاجِبٌ، وَأَمَّا الاِسْتِنَانُ وَالطِّيبُ فَاللَّهُ أَعْلَمُ أَوَاجِبٌ هُوَ أَمْ لاَ، وَلَكِنْ هَكَذَا فِي الْحَدِيثِ‏.‏ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ هُوَ أَخُو مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ وَلَمْ يُسَمَّ أَبُو بَكْرٍ هَذَا‏.‏ رَوَاهُ عَنْهُ بُكَيْرُ بْنُ الأَشَجِّ وَسَعِيدُ بْنُ أَبِي هِلاَلٍ وَعِدَّةٌ‏.‏ وَكَانَ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ يُكْنَى بِأَبِي بَكْرٍ وَأَبِي عَبْدِ اللَّهِ‏.‏

অর্থ : আমর ইবনু সুলাইম আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ সায়ীদ খুদরী (রা.) বলেন, আমি এ মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসূল (সা.) বলেছেন, জুমার দিন প্রত্যেক বালিগের জন্য গোসল করা কর্তব্য। আর মিসওয়াক করবে এবং সুগন্ধি পাওয়া গেলে তা ব্যবহার করবে। আমর (ইবনু সুলাইম) (রহ.) বলেন, গোসল সম্পর্কে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি তা কর্তব্য। কিন্তু মিসওয়াক ও সুগন্ধি কর্তব্য কিনা তা আল্লাহই ভাল জানেন। তবে হাদীসে এরূপই আছে। (সহিহ বুখারি: ৮৮০)

মেসওয়াক করা :

وَحَدَّثَنِي حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ الْبَاهِلِيُّ، حَدَّثَنَا بِشْرٌ، – يَعْنِي ابْنَ مُفَضَّلٍ – حَدَّثَنَا سَلَمَةُ، وَهُوَ ابْنُ عَلْقَمَةَ عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم ‏بِمِثْلِهِ ‏.‏

অর্থ : হজরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির গোসল ও মেসওয়াক করা কর্তব্য এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সে সুগন্ধিও ব্যবহার করবে। (সহিহ মুসলিম : ১৮৪৫)

জিকির করা :

أَمَّنْ هُوَ قٰنِتٌ ءَانَآءَ الَّيْلِ سَاجِدًا وَقَآئِمًا يَحْذَرُ الْءَاخِرَةَ وَيَرْجُوا رَحْمَةَ رَبِّهِۦ ۗ قُلْ هَلْ يَسْتَوِى الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ ۗ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُوا الْأَلْبٰبِ

অর্থ : ইমাম জুমার নামাজে আসার পূর্ব পর্যন্ত নামাজ, জিকির ও তেলাওয়াতে রত থাকা। জুমার দিনে যত সম্ভব জিকির করা বাঞ্ছনীয়। কোরআনে জিকির তথা আল্লাহর স্মরণের কথা এসেছে এভাবে- ‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের জন্য দ্রুত ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলব্ধি কর।’ (সুরা জুমা: ৯)

খুতবার সময় চুপ থাকা :

أَخْبَرَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْوَاحِدِ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ الْحَارِثِ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ الثَّقَفِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ غَسَّلَ وَاغْتَسَلَ وَابْتَكَرَ وَغَدَا وَدَنَا مِنَ الإِمَامِ وَأَنْصَتَ ثُمَّ لَمْ يَلْغُ كَانَ لَهُ بِكُلِّ خُطْوَةٍ كَأَجْرِ سَنَةٍ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا ‏”‏ ‏.‏

অর্থ : আওস ইবনু আওস সাকাফী (রা.) সূত্রে রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি শরীর ও মাথা ধৌত করত উত্তম রূপে গোসল করে ও জুমার সময়ের প্রথম সময়েই মসজিদে গিয়ে খুতবা প্রথম থেকে শুনতে পায় আর নিরব হয়ে ইমামের নিকটে বসে এবং কোন অনর্থক কাজ না করে, তার জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপে এক বছর আমল করার, এক বছর সালাত আদায় করার এবং সিয়াম পালন করার ন্যায় সওয়াব হরে। (সুনানে নাসায়ি : ১৪০১)

পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর কাপড় পরিধান করা :

حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ أَبِي سَهْلٍ، وَحَوْثَرَةُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ وَدِيعَةَ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ “‏ مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَأَحْسَنَ غُسْلَهُ وَتَطَهَّرَ فَأَحْسَنَ طُهُورَهُ وَلَبِسَ مِنْ أَحْسَنِ ثِيَابِهِ وَمَسَّ مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ مِنْ طِيبِ أَهْلِهِ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ وَلَمْ يَلْغُ وَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ اثْنَيْنِ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى ‏”

অর্থ : হজরত আবু জার (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করে, উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তার উৎকৃষ্ট পোশাক পরিধান করে এবং আল্লাহ তার পরিবারের জন্য যে সুগন্ধির ব্যবস্থা করেছেন, তা শরীরে লাগায়, এরপর জুমার সালাতে এসে অনর্থক আচরণ না করে এবং দুজনের মাঝে ফাঁক করে অগ্রসর না হয়, তার এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ ক্ষমা করা হয়। (সুনানে ইবনে মাজা: ১০৯৭)

মসজিদে সুগন্ধি লাগানো :

حَدَّثَنَا رِزْقُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِسْحَاقَ الْحَضْرَمِيُّ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ بْنُ قُدَامَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنْ تُتَّخَذَ الْمَسَاجِدُ فِي الدُّورِ وَأَنْ تُطَهَّرَ وَتُطَيَّبَ ‏.

অর্থ : হজরত ওমর (রা.) জুমার দিন দ্বিপ্রহরে মসজিদে সুগন্ধি লাগানোর জন্য আদেশ করেছেন। এছাড়াও যেকোনো সময় মসজিদে সুগন্ধি লাগানো উচিত। রাসুলুল্লাহ (স.) পাড়ায় পাড়ায় মাসজিদ নির্মাণ করতে, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং সুবাসিত করতে হুকুম দিয়েছেন। (ইবনু মাজাহ: ৭৫৯)

গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য কথা হলো, জুমার দিনে সূর্যদয় হতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অনেক আমল রয়েছে। এ দিনে এমন কোনও সময় বা নির্ধারিত কাজ নেই যা রাসূল (সা.) নির্দিষ্ট করে বলেছেন। সুতরাং মহান আল্লাহ পুরোপুরি নির্ধারিত না করার উদ্দেশ্য হলো, বান্দা যেন জুমার দিন সর্বদা ইবাদত বন্দেগি ও দোয়ায় মশগুল থাকেন।

আল্লাহ তায়ালা জুমার দিনকে সম্পূর্ণ ভিন্ন সম্মান দিয়েছেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে শুক্রবারের ইবাদত ও বিশেষ সময়ের দোয়া রব্বে করীমের পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি সুবর্ণ সুযোগ। মহান আল্লাহ আমাদেরকে এ বিশেষ দিনটির পরিপূর্ণ ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করুন।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জুমার দিন উল্লেখিত আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ

২ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানি ২টি হলো-গ্লোবাল...

জেড ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা হয়েছে। কোম্পানিটিকে ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঢাকা স্টক...

পুঁজিবাজারের ২ কোম্পানির এজিএমের তারিখ পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল লিমিটেড ও বিবিএস কেবলস পিএলসির বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ পরিবর্তন করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ...

শরীয়াহ পরিপালনে ইউনিয়ন ব্যাংক বদ্ধপরিকর

কর্পোরেট ডেস্ক : ইসলামী ব্যাংকিং এমন এক ব্যাংক ব্যবস্থা যেখানে সকল লেনদেনে সুদ নিষিদ্ধ।ব্যাংকিং সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ইসলামী শরীয়ার আলোকে পরিচালিত হয়। ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি....

সাউথইস্ট ব্যাংক, টাইনি টটস ও সামার ফিল্ড স্কুলের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

কর্পোরেট ডেস্ক : সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. টিউশন ফি কালেকশন সার্ভিস, পে-রোল ব্যাংকিং এবং অন্যান্য ব্যাংকিং পরিষেবা প্রদানের জন্য ব্যাংকের হেড অফিসে টাইনি টটস ও...

বরগুনায় প্রান্তিক মানুষের মাঝে এনআরবিসি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ

কর্পোরেট ডেস্ক : বরগুনা জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নিন্ম আয়ের প্রান্তিক মানুষদের মাঝে প্রকাশ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পুন:অর্থায়ন তহবিল কর্মসূচির আওতায়...