October 9, 2024 - 2:27 pm
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeকর্পোরেট-অর্থ ও বাণিজ্যকর্পোরেট সংবাদকর্ণফুলীতেও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের

কর্ণফুলীতেও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের

spot_img

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: টানা বর্ষণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। পাঁচ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘর-বাড়ি, তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, চিংড়ি ঘের ও পুকুর। বিভিন্নস্থানে উপড়ে পড়েছে গাছ। প্রায় সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে।

পানিতে তলিয়ে গেছে অধিকাংশ রাস্তাঘাট। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে এলাকার মানুষের। পাহাড়ধসের শঙ্কায় বাসিন্দাদের সরে যেতে সতর্ক করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন উপজেলা প্রশাসনের কমকর্তারা।

শনিবার রাত থেকে শুরু হয় অতি ভারী বর্ষণ। চারদিনের টানা বর্ষণে নিচু এলাকায় লোকালয়ে পানি উঠে গেছে। এতে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এতে বীজতলা ও নতুন রোপণ করা ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি পুকুর থেকে মাছও চলে গেছে।

কোনো কোনো রাস্তা হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। কর্ণফুলী নদীর পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে মানুষের বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ হাট বাজারের দোকানগুলো হাঁটুপানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অনেকে ঘরে চলছে না রান্না। গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে।

কর্ণফুলী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘উপজেলার বেশ কিছু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমরা ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছি। দুই/তিনটি ইউনিয়নে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে অনেকের বসবাস করছেন। তাদের সরে যাবার জন্য বলা হয়েছে।’ যদিও স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দেখা মিলছে না তেমন। ইউএনও জানান, তারপরও প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারদের নির্দেশ দিয়েছেন কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাদের তালিকা উপজেলায় জমা দিতে। সহায়তা করা হবে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে চলতি আগস্ট মাসের গত সাত দিনে ৬৬৪ মিলিমিটার (মিমি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে গত ৪ আগস্ট ৪২ দশমিক ৮ মিমি, ৫ আগস্ট ৬৪ দশমিক ২ মিমি, ৬ আগস্ট ২৩১ দশমিক ৫ মিমি এবং ৭ আগস্ট ২১৬ দশমিক ৪ মিমি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া অফিসের আমবাগন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ৪ আগস্ট ১২৫ মিলিমিটার, ৫ আগস্ট ৭৭ মিমি, ৬ আগস্ট ১৯৬ মিমি এবং ৭ আগস্ট ২০৮ মিমি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, এমন বৃষ্টিপাত আগামীকালও থাকবে। এরপর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে পারে। তবে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবারও ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু বিশ্লেষণে দেখা যায় চলতি আগস্ট মাসে পতেঙ্গা এলাকায় সাধারণত ৫৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা। কিন্তু গত সাতদিনেই বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬৬৪ মিলিমিটার। আবহাওয়া অফিস অতি ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির অবনতি ও পাহাড়ধসের সতর্কতা জারি করে।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘মানুষের জানমাল রক্ষার্থে চট্টগ্রাম মহানগরে ৬টি সার্কেলের মাধ্যমে ভাগ করে পাহাড় রক্ষা এবং মানুষের জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম কাজ করছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিদিন মাইকিং থেকে শুরু করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:

চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে সেনা মোতায়েন

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে যান চলাচল বন্ধ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ