কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে বান্দরবানের লামা, কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে চন্দনাইশ সড়কে জলাবদ্ধাতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম চান্দনাইশ এলাকার সড়কে পানিতে টইটুম্বুর দেখা গেছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের ওপর দিয়ে প্রবল স্রোতে পানি বয়ে যাচ্ছে। ফলে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। তাই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে যান চলাচল বন্ধ করা হয়।
এ ছাড়াও অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো কয়েক ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় রান্নাবান্না করতে না পারায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন এলাকার মানুষ।
গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। শনিবার রাত থেকে শুরু হয় অতি ভারি বর্ষণ। আবহাওয়া অফিস অতি ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির অবনতি ও পাহাড়ধসের সতর্কতা জারি করে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেল ৩টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২১৬ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। এ সময় আমবাগান আবহাওয়া অফিস ২০৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে।
এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ক্লাস ও পরীক্ষা মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর সোমবার (৭ আগস্ট) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) রূপক রায় স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে চট্টগ্রাম মহানগরীর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ১৯৮৩ সালের ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি ঝরেছে। ওই দিন সেখানে ৫১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। একই বছরের ৫ জুলাই চট্টগ্রামে ৪০৭ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরে। এরপর ১৯৮৫ সালের ৯ জুলাই ৩৭৪ ও ১৯৮৮ সালের ৮ জুলাই ৩০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এরপর চলতি বছর রোববার চট্টগ্রামে ৩২২ মিলিমিটার এবং সোমবার বান্দরবানে ৩৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
এর আগে হাটহাজারীতে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় জলাবদ্ধ সড়কের পাশে নালার পানিতে ডুবে নিপা পালিত নামে কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আনোয়ারায় পানিতে ডুবে মারা যায় এক শিশু। অন্যদিকে কক্সবাজারে পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চকরিয়ায় দুই শিশু এবং উখিয়ায় মা-শিশুর মৃত্যু হয়।