October 7, 2024 - 7:45 pm
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeআইন-আদালতযমুনা নদী ছোট করা হবে না, রিট খারিজ

যমুনা নদী ছোট করা হবে না, রিট খারিজ

spot_img

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনা নদীকে ‘ছোট করা হবে না’ বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড নিশ্চয়তা দেয়ায় এসংক্রান্ত রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১২ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চএই আদেশ দেন। যমুনা নদীকে ছোট করার পরিকল্পনা নেই বলে এর আগে হাইকোর্টকে এক প্রতিবেদনে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

হাইকোর্টে দাখিল করা ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) ফর যমুনা রিভার সাসটেইনবল ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট-১ এ বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় যমুনা নদী সংকোচনের কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রকল্পের আওতায় নদী মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের সংস্থান রাখা হয়েছে। মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশের আলোকে নদী ব্যবস্থাপনার জন্য ভবিষ্যৎ কৌশল কর্মপরিকল্পনা ও অবকাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (এএইচওয়াইডিটেক জিওমরফিক লিমিটেড অ্যান্ড সিইজিআইএস) কর্তৃক দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রস্তাবিত প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত অবকাঠামো বাস্তবায়নের ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানি কৃষি, মৎস্য সম্পদ এবং জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে না। তদপুরি ভবিষ্যতে যমুনা নদীর ডাউনস্ট্রিমের পরিবেশ এবং যমুনা সেতু ও পদ্মা সেতুসহ অন্যান্য স্থাপনার ওপর ও বিরূপ প্রভাব পড়বে না। উপরন্তু, প্রস্তাবিত প্রকল্পে পরবর্তী পর্যায়ের জন্য বিস্তারিত সমীক্ষাসহ পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব নিরুপণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উক্ত সময়ে আরও বিস্তারিতভাবে এসকল প্রভাব নিরুপণ করা হবে।

গতকাল রোববার (১১ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রজেক্ট ফাইলসহ যাবতীয় নথি দাখিল করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অরবিন্দ কুমার রায় এসব নথি দাখিল করেন।

গত ২৮ মে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনা নদীকে ছোট করার প্রজেক্ট ফাইল তলব করেন হাইকোর্ট। ১০ দিনের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে এ সংক্রান্ত সব নথি আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘যমুনা নদীকে ছোট করার চিন্তা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করে এইচআরপিবি নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, যমুনা নদী প্রতি বছর বড় হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার সময় নদীটি ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার হয়ে যায়। এত বড় নদীর প্রয়োজন নেই। তাই এটির প্রশস্ততা সাড়ে ৬ কিলোমিটার সংকুচিত করা হবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনাকে ছোট করার এমন আইডিয়া এসেছে খোদ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্তাদের মাথা থেকে। এজন্য তারা ১১শ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও প্রণয়ন করেছেন। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে যখন বারবার ব্যয় সংকোচনের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে, সে সময় মন্ত্রণালয়টি এমন প্রকল্প নিয়েছে কোনো ধরনের গবেষণা ছাড়াই। বিশেষজ্ঞরা বিরল এ প্রকল্পকে অবাস্তব বলছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদী ছোট করতে যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বাংলাদেশ তো বটেই-পৃথিবীর কোনো দেশেই আগে প্রয়োগের নজির নেই। এ কারণে প্রকল্পটি নিয়ে খোদ সরকারের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টদের একটি পক্ষ বলছে, কোনো ধরনের জরিপ ছাড়া ঋণের টাকায় এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনো যৌক্তিকতা নেই। প্রকল্পের বিরোধিতা করে নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের প্রকল্প নেওয়া ঠিক হবে না। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের আশঙ্কা রয়েছে। বাড়তে পারে বন্যা ও প্লাবনের ঝুঁকি। পাশাপাশি এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে দেশের অন্যতম স্থাপনা পদ্মা সেতু ও যমুনা সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ