অনলাইন ডেস্ক : এরা কেউ পোষ্য পাখি নয়। প্রতিদিন যে পাখি দেখে আমরা অভ্যস্থ, সেই পাখি এগুলো নয়। ডেনমার্কের গবেষকরা এবার এমনই দুই ভিন্ন প্রজাতির পাখি খুঁজে পেয়েছেন যারা ভয়ঙ্কর এবং প্রাণঘাতী। এই দুই পাখিই তাদের ডানার নিচে লুকিয়ে রাখে নিউরোটক্সিন জাতীয় বিষ। পাপুয়ানিউগিনির জঙ্গলে এই ‘বিষপক্ষী’র খোঁজ মিলেছে।
জানা গিয়েছে, এই সব পাখিরা কোনও ক্ষতিকর খাবার খেলে যেমন হজম করতে পারে। তেমন সেই খাবার থেকে বিষ প্রস্তুত করে তা দেহে সঞ্চয়ও করে রাখে।
গবেষকরা দেখেছেন, এই শক্তিশালী নার্ভ এজেন্টগুলিকে ডানার নিচে যেভাবে সঞ্চয় করে রাখে সেই বৈশিষ্ট্যটিই তাদের বাকিদের থেকে আলাদা করেছে।
ডেনমার্কের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা এই বিষাক্ত পাখিদের দুটি প্রজাতিকে শনাক্ত করতে পেরেছি। এই পাখিরা তাদের দেহে কীভাবে নিউরোটক্সিন সঞ্চয় করে রাখে তা বুঝতেও সক্ষম হয়েছি আমরা।”
জানা গিয়েছে, এই পাখির একটি প্রজাতির বিজ্ঞানসম্মত নাম- Pachycephala schlegelii. ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এগুলিকে দেখতে পাওয়া যায়। আরেকটি প্রজাতির বিজ্ঞানসম্মত নাম- Aleadryas rufinucha. এই পাখির দেহে যে বিষ রয়েছে এই একই বিষ দেখতে পাওয়া যায় দক্ষিণ এবং মধ্য আমেরিকার এক ব্যাঙের প্রজাতির দেহেও। যাদের দেহে সামান্যতম স্পর্শ করলেই মানুষের মৃত্যু অবধারিত।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই পাখিগুলির দেহে রয়েছে Batrachotoxin নামের এক ধরনের নিউরোটক্সিন। উচ্চমাত্রাতেই থাকে এই বিষ। গোল্ডেন ফ্রগের দেহে যে পরিমাণ বিষ থাকে, সেই একই পরিমাণ বিষ থাকে এদের দেহেও। এই নিউরোটক্সিন দেহে প্রবেশ করলে সঙ্গে সঙ্গে পেশি খিঁচুনি শুরু হয় এবং মুহূর্তে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যায়।
কিন্তু প্রশ্ন ওঠে এখানেই যে, যদি এই বিষ এতটাই প্রাণঘাতী হয় তাহলে কীভাবে পাখিরা তাদের দেহে একে সঞ্চয় করছে? তাদের দেহে কী কোনও প্রভাব পড়ছে না? গবেষকদের কথায়, এই সব পাখিদের কোষ মধ্যস্থ সোডিয়াম চ্যানেলে জেনেটিক মিউটেশন হয়েছে। যার জন্য এই নিউরোটক্সিন তাদের কোষে প্রবেশ করলেও সোডিয়াম চ্যানেলকে ব্লক করতে পারে না৷ ফলে কোনও বিষক্রিয়াও দেখা যায় না। সূত্র-জিনিউজ।
আরও পড়ুন:
দ্রুত ওজন কমে যাচ্ছে? ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন না তো