নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভায় স্বীকৃতির এ দাবি জানান তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শহীদের আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যায়নি, যাবেও না।’
শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে গণভবনে বসে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর জাতীয় সংসদে সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে জাতীয়ভাবে দেশে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হচ্ছে।
স্বাধীনের পর থেকে গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের বিষয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, গণহত্যা জাদুঘরসহ নানা সংগঠনের প্রচেষ্টায় গত কয়েক দশকে গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি জোরালো হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষও গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে দেশে নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে।
ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম গণহত্যা হলেও জাতিসংঘে বা আন্তর্জাতিক প্রাতিষ্ঠানিক কোনো দলিলে এর স্বীকৃতি এখনো নেই। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরে আর তার ধারাবাহিকতা অনুসরণ করা হয়নি।
জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বক্তব্যে পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংসতার কথা উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে, ২৫ মার্চ কালরাতকে জাতীয় গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির দাবি জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে ৩ কোটি মানুষ মানুষ গৃহহারা হয়, এক কোটি মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে ছিল, লাশ শেয়াল কুকুরে খেয়েছে, সেটা মানুষ দেখেছে, মেয়েদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে পাশবিক অত্যাচার করেছে। কাজেই ২৫শে মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাক সেটাই আমরা চাই।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশ জাতির পিতা গড়ে তুলেছিলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবেও আমরা স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। মাত্র তিন বছর সাত মাস তিনদিন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ১৫ আগস্টের পরে ৩ নভেম্বর জাতির পিতার পরে চার জাতীয় নেতা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়। আমি শুধু এটুকু বলবো, শহীদের রক্ত বৃথা যায় না। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমরা বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। লাখো শহীদের কাছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কাছে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য লাখো মানুষের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। উন্নত-সম্মৃদ্ধ হয়েই এগিয়ে যাবে দেশ। পরে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে চট্টগ্রাম ৮ আসনের উপনির্বাচনে নোমান আল মাহমুদকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ।
আরও পড়ুন:
দেশের ৯৮ শতাংশ মানুষ পাচ্ছেন নিরাপদ পানির সুবিধা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিয়াম ধনী-গরিবের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে: প্রধানমন্ত্রী
রমজানে আত্মসংযমের মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধি ঘটে : প্রধানমন্ত্রী