October 8, 2024 - 12:26 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeকর্পোরেট-অর্থ ও বাণিজ্যঅর্থ-বাণিজ্যঈদকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছে ইমিটেশন গহনার কারিগররা

ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছে ইমিটেশন গহনার কারিগররা

spot_img

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে দেবহাটা উপজেলার উত্তর সখিপুর গ্রাম। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট বালা (রুলি) তৈরির কারখানা।

চুড়ি তৈরির কাজ করে গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারই এখন সচ্ছল। গ্রামের সব বাড়িতেই গড়ে উঠেছে ইমিটেশন গহনা তৈরি কারখানা।

দামে কম ও ব্যবহারে সহজলভ্য হওয়ায় দেশে বাড়ছে ইমিটেশন গহনার ব্যবহার। তবে রোজার ঈদকে সামনে রেখে বাড়ছে এখানকার কারিগরদের ব্যস্ততা।

এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কেউ ছোট হাতুড়ি দিয়ে পিতলের পাত পিটিয়ে সাইজ করছেন। কেউ সেটিকে গোলাকার পাইপে পরিণত করছেন। আবার কেউ সেটিতে গালা ভরে গোলাকার বালা তৈরি করছেন।

সম্পুর্ন হাতে তৈরি এসব ডিজাইন করা বালার চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। বালার উপর নান্দনিক সব ডিজাইনের কারনে এখানকার কারিগরদেরও রয়েছে বেশ সুনাম।

এ সব ইমিটেশনের তৈরি করা বালা সংগ্রহ করেন ঢাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা। খোদাই করা নকশার এসব বালা ( রুলি) বিক্রি করা হয় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি মার্কেটে। ব্যবসায়ীদের হিসেবে এই গ্রামে প্রতি মাসে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বালা বেচাকেনা হয়।

সখিপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে গ্রামের এক যুবক ঢাকায় একটি বালা তৈরির কারখানায় কাজ করত। সেখান থেকে গ্রামে ফিরে এলাকার কয়েকজন বেকার যুবক ও নারীদের সে এই বালা তৈরির কাজ শেখায়। ভাল দাম ও চাহিদা থাকায় দিন দিন বৃদ্ধি পায়। সামনে রোজার ঈদ উপলক্ষে আমাদের ব্যস্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে এ সময়ে ইমিটেশন গহনার প্রচুর চাহিদা থাকে ফলে অডার অনুযায়ী দিনরাত কাজ করতে হয়।

একই গ্রামের সাইফুল সরদার বলেন, আগে মাছের ব্যবসা করতাম করোনার সময় বাড়িতে বসে না থেকে বালা তৈরির কাজ শিখেছিলাম। আমার স্ত্রীও এই কাজ করে। বর্তমানে আমরা দুইজন মিলে দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ জোড়া বালা তৈরি করি।

ইব্রাহিম বলেন,বর্তমানে আমাদের গ্রামের প্রায় শতাধিক ছোট ছোট কারখানায় প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার জোড়া বালা তৈরি হয়।

পাইকারি বালা (রুলি) ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, তামা, ধুনো, ইটের কণা ও সোহাগার সংমিশ্রণে তৈরি হাতের নকশাসহ কয়েক দফা কাজ শেষে একেক জোড়া বালা স্বর্ণের রং করে বাজারে বিক্রি করা হয়। আমরা এখান থেকে সরাসরি ঢাকার পাইকারি মার্কেটে বিক্রি করি।

তিনি আরও বলেন, ঢাকায় পাঠানোর সময় সীমান্ত এলাকা হওয়ায় অনেক সময় বিজিবি ও পুলিশ এটাকে ভারতীয় পণ্য মনে করে আটক করে। এতে আমাদের নানাভাবে হয়রানি হতে হয়। এজন্য বর্তমানে এখানে তৈরিকরা বালাগুলো ডিজাইনের পর রং না করেই ঢাকাতে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে আমরা পণ্যর ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) সাতক্ষীরার উপব্যবস্থাপক গোলাম সাকলাইন জানান, সখিপুর গ্রামের মানুষ এই কাজের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যর পরিবর্তন করেছে। তারা আগ্রহী হলে বিসিকের পক্ষ থেকে তাদের আধুনিক প্রশিক্ষণ ও ঋণ দেয়া হবে।এবং একই সাথে হয়রানি রোধে তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের লাইসেন্স প্রদান করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ