মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: এক ইঞ্চি জমিও পতিত না রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই খবরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে উপজেলা পর্যায়ে জমি অনাবাদি না রাখার বার্তা দেওয়া হয়। এমনকি কেউ যদি ফসলি জমি অনাবাদি রাখেন, সে জমি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত করার সতর্ক বার্তাও দেওয়া হয়। কৃষি খাতে বিপ্লব ও দেশের চাহিদার ঘাটতি মেটাতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কক্সবাজার কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চলতি রবি মৌসুমে ৮ উপজেলায় কৃষি প্রণোদনা পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৪৫০ জন কৃষক।
তার মধ্যে গম ৩০০ জন, ভুট্টা ৪৫০ জন, সরিষা ২৭০০ জন, বোরো হাইব্রিড ২৪০০ জন এবং বোরো উফশী ১০০০০ হাজার জন। চকরিয়া উপজেলায় গম ১’শ জন, ভুট্টা ৮০ জন, সরিষা ৬৫০ জন, বোরো হাইব্রিড ৫০০০ জন, বোরো উফশী ২০০০ জন মোট ৭৮৩০ জন।
পেকুয়া উপজেলায় গম ২০ জন, ভুট্টা ৫০ জন, সরিষা ৫০০ জন, বোরো হাইব্রিড ৩২০০ জন বোরো উফশী ১২০০ জন মোট ৫০৭০ জন। রামু গম ১৯ জন, ভুট্টা ৬০ জন, সরিষা ৪০০ জন, বোরো হাইব্রিড ৩৩০০ জন বোরো উফশী ১২০০ জন মোট ৫৯৬০ জন। সদর উপজেলায় গম ১০ জন, ভুট্টা ৬০ জন, সরিষা ৩৫০ জন, বোরো হাইব্রিড ৩৪০০ জন বোরো উফশী ১২০০ জন মোট ৬০১০ জন। উখিয়া উপজেলায় গম ২০ জন, ভুট্টা ৫০ জন, সরিষা ৩০০ জন, বোরো হাইব্রিড ৩২০০ জন বোরো উফশী ১২০০ জন মোট ৪৭৭০ জন। টেকনাফ উপজেলায় গম ১০০ জন, ভুট্টা ৮০ জন, সরিষা ১৫০ জন, বোরো হাইব্রিড ১৫০০ জন এবং বোরো উফশী ১০০০ জন মোট ২৮৩০ জন। মহেশখালী গম ৩০ জন, ভুট্টা ৫০ জন, সরিষা ৩০০ জন, বোরো হাইব্রিড ৩২০০ জন, বোরো উফশী ১২০০ জন মোট ৪৭৮০ জন এবং কুতুবদিয়া উপজেলায় গম ১০ জন, ভুট্টা ২০ জন, সরিষা ৫০ জন বোরো হাইব্রিড ১২০০ জন ও বোরো উফশী ১ হাজার জনসহ মোট ২২৮০ জন কৃষক পেয়েছেন সরকারের দেওয়া কৃষি প্রণোদনা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি রবি মৌসুমে (২০২২-২০২৩ সাল) বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৪৫০ বিঘা জমি। প্রতিজন কৃষক এক বিঘা পরিমাণ জমির জন্য প্রণোদনা পেয়েছেন। প্রতিজন কৃষককে হাইব্রিড বীজ ২ কেজি। বোরো উফশী প্রতিজন পেয়েছেন ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ১০ এমওপি। গম জনপ্রতি ২০ কেজি বীজ, ডিএপি ১০ কেজি, এমওপি ১০ কেজি। ভুট্টা জনপ্রতি ২ কেজি বীজ এবং ২০ কেজি ডিএপি এমওপি ১০ কেজি। সরিষা বীজ জনপ্রতি ১ কেজি, ডিএপি ১০ কেজি এবং এমওপি ১০ কেজি করে প্রদান করা হয়েছে।
এবারের ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৭ হাজার ৪৫০ বিঘা জমিতে রবি মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি অফিস। যেখানে প্রণোদনা পেয়েছেন ৩৭৪৫০ জন কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন চট্টগ্রাম নিউজকে বলেন, বোরো ও রবিশস্যের আবাদ ও উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার এবার সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রণোদনা দিয়েছে। এতে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোয় বড় ভূমিকা রাখবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহীন ইমরান বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন পতিত কোন জমি যাতে খালি না থাকে। উপজেলা পর্যায়ে এমন নির্দেশনা আছে। আমরা চাই খাদ্য কোন ঘাটতি থাকবেনা৷ যদি কোনও কৃষক জমি আবাদ করতে অপারগ হন, তাহলে সংশ্লিষ্ট দফতরের সহযোগিতায় জমি আবাদ করার ব্যবস্থা করবো।
কৃষকরা জানান, বীজ ও সার ইতিমধ্যে ক্ষেতে ব্যবহার করা হয়েছে। সামনে মৌসুমে ভালো ফলন আশা করছি। লক্ষ্য মাত্রা ছুঁয়ে যেতে পারে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ হাসান চট্টগ্রাম নিউজকে বলেন, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার দিয়েছি।অনাবাদি থাকা জমিগুলো কৃষকদের সাথে কথা বলে কৃষি খাতে নিয়ে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়নের জন্য ৩৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যা বিগত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা ছিল।