নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় ৬ জেলার ১৫ লাখ পরিবারকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে। তিনি জানান, প্রতিটি পরিবার বছরে ৫০ হাজার টাকার সমপরিমাণ স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যসেবা-সংক্রান্ত সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে হলে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবাও তার একটি বিরাট অংশ হবে। আমরা এই কর্মসূচি শুরু করেছি। একটি জেলা থেকে এখন ছয়টি জেলায়। এখন দেশের সবগুলো জেলায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে।
তিনি বলেন, মানিকগঞ্জ, বরিশাল, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, কুড়িগ্রাম এবং ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এই সেবা পাওয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজের আওতায় এটি করা হচ্ছে।
নারীদের জরায়ুমুখ ক্যানসার বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সারাদেশে স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম (যাচাই কর্মসূচি) হাতে নিয়েছি। সব উপজেলায় এই প্রোগ্রামটি রয়েছে। এটিকে ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে। জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিবি নামের একটি টিকাও রয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব নারীকে এই এইচপিবি টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। এরমধ্য দিয়ে জরায়ুমুখ ক্যানসারের সংখ্যা অনেক কমে যাচ্ছে।
এখন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রতিরোধের ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। মানসিক স্বাস্থ্যেও জোর দিচ্ছি। স্কুল হেলথ প্রোগ্রামের জন্য একটি পুস্তিকা তৈরি করা হয়েছে, সেটি সব স্কুলে দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দরিদ্র পরিবারকে টার্গেট করেই এই সেবা দেয়া হবে। একটি উপজেলায় ১৫ থেকে ২০ হাজার পরিবারকে তালিকায় নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, হজ পালনের সময় তারা কিভাবে চলবে, সেই নির্দেশনা জানিয়ে একটি স্বাস্থ্য বিধি বই আকারে তৈরি করে তাদের দিচ্ছি।
চতুর্থ ডোজ করোনা টিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চতুর্থ ডোজ যেটি দেয়া হচ্ছে, তার কোনোটিই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়নি। এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কেউ যাতে গুজবে কান না দেয়।
ডলার সংকটে এলসি বন্ধ হওয়ায় চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে— জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, আমরা এ ধরনের সমস্যার কথা শুনিনি। আমাদের স্টক আছে এবং প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাচ্ছি। এ বিষয়ে সরকার খুবই আন্তরিক। স্বাস্থ্যসেবার জন্য কোনো কিছু আমদানি করার প্রয়োজন হলে অন্য কিছু বন্ধ রেখে হলেও পূরণ করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, কোনো সমস্যা হবে না।
নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নিপাহ ভাইরাস এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। এখানে নতুন কোনো রোগী আমরা সেভাবে পাচ্ছি না। কোনো মৃত্যু হয়নি।
তিনি বলেন, প্রস্তুতি হিসেবে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে একটা ইউনিট করে দেওয়া হয়েছে। আইসিইউ তৈরি করা হয়েছে। এখানে নিপাহ বা এ ধরনের কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সঠিক চিকিৎসা পেতে পারে। যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সে জন্য আমরা এ ইউনিটটি করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) সৈয়দ মজিবুল হক, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মোঃ সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
কোস্ট গার্ডকে উপকূলবাসীর প্রকৃত বন্ধু হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি হলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন
ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বই দুটি না পড়ানোর নির্দেশ