নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ব্যাংক খাতের আমনতে রয়েছে সুদ হারের সীমা। অর্থনীতিতে আছে ব্যাপক মূল্যস্ফীতি। একইসঙ্গে প্রকাশ পেয়েছে ঋণ অনিয়মের অনেক তথ্য। এর ফলে মানুষ সঞ্চয়ের টাকা ব্যাপকহারে উত্তোলন করতে শুরু করছে। এতে গত এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের বাইরে বা মানুষের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৫৭ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে মানুষের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। যা ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত এক বছরের ব্যবধানে মানুষের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৫৭ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। যা শতকরা হিসাবে ২১.৪৩ শতাংশ।
এদিকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে মানুষের হাতে রাখা অর্থের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮৭ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ২০২১ সালে হাতে অর্থ রাখা বেড়েছিল ২৩ হাজার ২৬১ কোটি টাকা বা ১১.০৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাসে মানুষের হাতে থাকা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৪৮ টাকা। সেটি ডিসেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে শুধু ৬ মাসে হাতে রাখা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৩১ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা বা ১১.২৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘মানুষ যখন অর্থ হাতে রাখে তখন ব্যাংকের বাইরে নগদ অর্থ বেড়ে যায়। সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি বেশ বেড়েছে। তাই মানুষের বাড়তি খরচ হচ্ছে। বাড়তি খরচ মেটাতেই অনেকে নগদ অর্থ তুলে খরচ করতে পারেন।’
এদিকে দেশের প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ন্যায় শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর আপদকালীন তারল্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মুদারাবাহ লিকুউটিটি সাপোর্ট (এমএলএস) পদ্ধতি চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন শরিয়া ব্যাংকগুলো এমএলএসের আওতায় ৭,১৪ ও ২৮ দিন মেয়াদি বিশেষ তারল্য সুবিধা সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে নিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২০২০ সালের এপ্রিলে ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যা প্রকৃত মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম। কেননা, বর্তমান বাজার মূল্যস্ফীতি সরকারিভাবে ৯ শতাংশের বেশি। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার মতে তা ১৩ শতাংশের বেশি।