নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের সদ্য পদত্যাগ করা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) মেহমুদ হোসেন আজ আবার প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নিচ্ছেন। ব্যাংকটির কোম্পানি সচিব মো. কায়সার রশিদ গত ২ ফেব্রুয়ারি সই করা একটি চিঠিতে মেহমুদ হোসেনকে এমডি পদে যোগদানের অনুরোধ জানিয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর আজ পুনরায় ব্যাংকটিতে যোগ দিচ্ছেন তিনি।
মেয়াদ শেষ হওয়ার ১১ মাস আগে গত ১৮ জানুয়ারি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন মেহমুদ হোসেন। তার এমডি পদে থাকার মেয়াদ ছিল আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পদত্যাগ করার ১১ দিন পর রোববার (২৯ জানুয়ারি) গভর্নর তাকে ডেকে নিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকে যোগদান করতে বলেন। এতে ইতিবাচক সায় দিয়েছেন মেহমুদ হোসেন।
অভিযোগ রয়েছে, সিকদার পরিবারের চাপের মুখে মেহমুদ হোসেন পদত্যাগ করেছেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার গভর্নরসহ একাধিক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্যাংকটির অন্যতম পরিচালক রন হক সিকদার। এমডির পদত্যাগ নিয়ে আলোচনার মধ্যে ওই বৈঠক হয়।
তবে এমডির পদত্যাগ প্রসঙ্গে ২৫ জানুয়ারি ন্যাশনাল ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হোসেন তার পদত্যাগপত্রে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ উল্লেখ করেছেন, তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়নি।
এতো আরও বলা হয়, গত ১৬ জানুয়ারি রাজধানীর বনানীর ১১ নম্বর সড়কের সিকদার হাউসে ন্যাশনাল ব্যাংকের ৭-৮ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হোসেন ব্যাংকের পরিচালকরা রিকভারি ও নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) সংক্রান্ত মিটিংয়ে যোগ দেন। ওই মিটিংয়ে অডিট কমিটির পক্ষ থেকে তাকে ব্যাংকের বিভিন্ন ইনডিকেটর ও সামগ্রিক পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
ওই মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯ জানুয়ারি অডিট কমিটির মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এসময় তিনি যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ জানুয়ারি পরিচালনা পর্ষদের কাছে তিনি ছুটির জন্য আবেদন করেন। পরবর্তী সময়ে একই দিনে তিনি ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুয়ায়ী, বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ ১১ হাজার ৩৩৬ কোটি। বিতরণ করা ঋণের যা ২৭.৪৬ শতাংশ। ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৭ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটির ঋণ আমানত অনুপাতের হার ৯২.৯ শতাংশ, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ বেশি।