স্পোর্টস ডেস্ক: পেশাদার স্কাইডাইভার আশিক চৌধুরী এবার নতুন মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার স্বপ্ন মাথায় রেখে এবার ৪১ হাজার ফুট উঁচুতে উড়ে যাওয়া বিমান থেকে লাফ দেবেন আশিক, সঙ্গে থাকবে দেশের গৌরবের লাল-সবুজ পতাকা। আশিকের এই প্রচেষ্টায় স্পনসর হিসেবে পাশে থাকছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি)।
মঙ্গলবার (২১ মে) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে দুঃসাহসী এই স্কাইডাইভার নিজেই তার পরিকল্পনার কথা সবাইকে জানান। সংবাদ সম্মেলনে আশিক চৌধুরী তার বক্তব্যে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এই প্রচেষ্টার নাম দেয়া হয়েছে ‘দ্য হাইয়েস্ট এভার স্কাইডাইভ উইথ অ্যা ফ্ল্যাগ’। আগামী ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের একটি এয়ারফিল্ডে এই স্কাইডাইভ ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রে কেন? এ প্রশ্নের জবাবে আশিক বলেন, ‘সাধারণত বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ ৩৫ হাজার ফুটের নিচ দিয়ে চলাচল করে। এর ওপরে উঠতে বিশেষায়িত বিমান দরকার হয়। সঙ্গে লাগে অনুকূল আবহাওয়া, যা যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফিল্ডের আকাশে পাওয়া যায়।
এর আগে বাংলাদেশের কেউ কখনো এই উচ্চতা থেকে লাফ দেওয়ার চেষ্টা করেনি। আশিক তার সাফল্যের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন যেন তিনি সবাইকে গর্বিত করতে পারেন। দেশের পতাকা হাতে রেকর্ড গড়ার তার এই রোমাঞ্চকর প্রচেষ্টায় স্পনসর হিসেবে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস নিয়ে এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংক ইউসিবি। সংবাদ সম্মেলনে আশিক চৌধুরীর হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেন ইউসিবির ব্র্যান্ড মার্কেটিং ও কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান জনাব আবুল কালাম আজাদ।
সংবাদ সম্মেলনে আশিক চৌধুরী বলেন, “আকাশ থেকে লাফ দিয়ে নিচে নামার সময় এক ধরনের স্বাধীনতা ও রোমাঞ্চকর অনুভূতি সৃষ্টি হয়। এই রোমাঞ্চকর অনুভূতি আমাকে সবসময় নিজের সীমাবদ্ধতাকে জয় করে নিজেকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। এবার আমি ৪১,০০০ ফুট থেকে লাফ দিবো। এটি বেশ কঠিন হবে কারণ নানা প্রতিকূলতা (জটিল অ্যারোডাইনামিকস ফ্যাক্টর) পেরিয়ে মাটির দিকে অগ্রসর হতে হবে। আমার হাতে থাকবে দেশের পতাকা। আমি আমার কাজটি যথযাথভাবে করতে পারলে গিনেজ রেকর্ড হবে। দেশের সম্মান বৃদ্ধি পাবে। এই দুঃসাহসিক প্রয়াসে পাশে থাকার জন্য আমি আন্তরিকভাবে ইউসিবি’কে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি বাংলাদেশকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার নিয়ে যেতে পারবো। ভূপৃষ্ঠ ছাড়িয়ে ১০ থেকে ৬০ কিলোমিটারের মধ্যবর্তী জায়গাকে বলা হয় স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার।”
উল্লেখ্য, ৪০ বছর বয়সী স্কাইডাইভার আশিক চৌধুরী একজন ক্যারিয়ার ব্যাংকার। যশোরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা আশিকের মাথায় স্কাইডাইভিংয়ের স্বপ্ন আসে মূলত পাইলট বাবার কাছ থেকে। শৈশব থেকেই তিনি মহাশূন্যে পাখির মতো ওড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। পেশাদার ব্যাংকার হওয়ার কারণে আশিক সিঙ্গাপুর ও ঢাকা দুই জায়গাতেই যাতায়াতের মধ্যে থাকেন। পেশাদার কাজের পর সময় পেলেই মেতে উঠেন আকাশ থেকে লাফিয়ে পড়ার খেলায়। ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০ বার আকাশ থেকে লাফ দিয়েছেন।