নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোটার তালিকা হালনাগাদ শেষে দেশে ভোটার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন। এবার হালনাগাদ ভোটার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে প্রায় ৮০ লাখ ভোটার। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকালে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানান।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হালনাগাদের পূর্বে দেশে ভোটার সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। হালনাগাদ কার্যক্রমে আরও ৭৯ লাখ ৮৩ হাজার ২৭৭ জন এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
সচিব জানান, দেশে বর্তমানে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১১২ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৬ লাখ ৭৭ হাজার ২০৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৮৩৭ জন।
২০২২ সালের ২ মার্চ পর্যন্ত মোট ভোটার ছিল ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৪৫৪ জন।
২০২২ সালে হালনাগাদে অন্তর্ভুক্ত ভোটার সংখ্যা ৭৮ লাখ ৮৩ হাজার ২৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪০ লাখ ৭২ হাজার ৪৫৫ জন। নারী ৩৯ লাখ ১০ হাজার ৪৩৯ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ৩৮৩ জন। ওই বছরের হালনাগাদে কর্তনকৃত ভোটার সংখ্যা ২২ লাখ ৯ হাজার ১২৯। এর মধ্যে পুরুষ ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮৭২ জন। নারী আট লাখ ৩০ হাজার ২৫৭ জন।
গত বছরের ২০ মে থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত চার ধাপে তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধনের কাজ সম্পন্ন করে ইসি। হালনাগাদের খসড়া তালিকা পূর্ব ঘোষিত সময় (১৫ জানুয়ারি) অনুযায়ী প্রকাশ করা হয়। এটি বিভিন্ন জনবহুল স্থানে প্রকাশ্যে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেন কারও কোনো ভুল থাকলে আবেদন সংশোধনের সুযোগ পান।
এক্ষেত্রে দাবি, আপত্তি বা সংশোধনের আবেদন করার শেষ সময় ৩১ জানুয়ারি। অর্থাৎ দাবি, আপত্তি বা সংশোধনের জন্য সময় থাকছে ১৬ দিন। সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষ সেই আবেদন নিষ্পত্তি করবে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। আবেদন নিষ্পত্তির পর হালনাগাদকৃত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২ মার্চ।
দাবি, আপত্তি ও সংশোধন সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তির জন্য প্রতিটি উপজেলা/থানার ভোটার এলাকার জন্য ক্ষেত্রবিশেষে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা/অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা/সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসার/অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সিটি কর্পোরেশন ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকার জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা/সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার/জেলা নির্বাচন অফিসার/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)/ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং কতিপয় বিশেষ এলাকার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা)-কে সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষ (রিভাইজিং অথরিটি) নিয়োাগ করা হয়েছে।
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর এ পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালানাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে পাঁচবার। ২০০৯-২০১০ সাল, ২০১২-২০১৩ সাল, ২০১৫-২০১৬ সাল, ২০১৭-২০১৮ সাল ও ২০১৯-২০২০ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করে ইসি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন এমন ভোটারের সংখ্যা দাঁড়াবে ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদে ১৫-১৭ বছর বয়সী এবং ভোটারযোগ্য বাদ পড়া নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ২০২৩ সালে নতুন যারা ভোটার তালিকাভুক্ত হচ্ছে, তারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। বাকিরা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় যুক্ত হবে।