ভালুকায় হিন্দু যুবককে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ১০

Posted on December 22, 2025

ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সন্দেহভাজন ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে ভালুকার হবিরবাড়ী এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়া ওই ঘটনায় পৃথক অভিযানে র‌্যাব গ্রেফতার করেছে সাতজন।

থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোঃ আজমল হাসান সগীর (২৬), মোঃ শাহিন মিয়া (১৯) ও মোঃ নাজমুল (২১)।

আজমল ও শাহিনের বাড়ি ভালুকায়। আর নাজমুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন ও অর্থ) এবং মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন আজ শনিবার এসব তথ্য জানান।

অন্যদিকে, র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃতরা হলেন তারেক হোসেন (১৯), লিমন সরকার, মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিঝুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হাসেন (৩৮) এবং মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের র‌্যাব ১৪ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব ১৪-এর অধিনায়ক নয়মুল হাসান। তবে গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতার ব্যক্তিদের আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতে হস্তান্তর করা হবে।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলার সময় মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ ওঠে পোশাক শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাস (২৮)-এর বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন ও কারখানার কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজন দিপুকে কারখানা থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে আসে। ওই সময় গণপিটুনিতে মারা যান দিপু। পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভাজকের একটি গাছে দিপুর মরদেহ ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাত আড়াইটার দিকে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

এদিকে নিহতের বাবা রবি চন্দ্র দাস ও বোন চম্পা দাসের দাবি, উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে দিপুকে মিথ্যা অপবাদে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দাবি, দিপু শিক্ষিত এবং সচেতন ছিলেন, তিনি এমন কাজ (ধর্ম অবমাননা) করতে পারেন না।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। কেন ওই যুবককে পুলিশের হাতে না দিয়ে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।