কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় প্রেস বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, বিকেল ৫টা নাগাদ তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পদত্যাগপত্র কার্যকর হবে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের সাফল্য কামনা করেছেন। ভবিষ্যতেও গণতন্ত্র বিকাশে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মতো সাহসী ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা করেন ড. ইউনূস। সরকারের মধ্যে থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা জীবনে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।’
দুই উপদেষ্টার স্থলে কারা দায়িত্ব পালন করবেন, এই ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এককভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানিয়েছেন শফিকুল আলম।
তিনি আরও বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে বলে প্রথম থেকেই বলে আসছে সরকার। কিছু তথাকথিত ব্যক্তি ও সিনিয়র সাংবাদিক সন্দেহ তৈরি করছেন। এতে হয়তো তাদের কিছু ভিউ বাড়ছে।
গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণভোট নিয়ে দেশজুড়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই প্রচারণা পৌঁছে যাবে।
এর আগে বিকেলে বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসিফ মাহমুদ জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি নির্বাচন করবো, এটা নিশ্চিত। তবে পদত্যাগের বিষয়ে আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারবো না। পদত্যাগের বিষয়ে পরবর্তী তথ্য জানা যাবে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে। সেখান থেকেই এই বিষয়ে জানানো হবে।
তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি আমি নির্বাচন করব। তবে কোন আসন বা দল থেকে করব সে বিষয়ে পরে জানাব।
আসিফ মাহমুদ আরো বলেন, আমি আগেও বলেছি, উপদেষ্টা পদে থেকে নির্বাচন করা উচিত নয়। যদিও আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। তবে আমি নিজেও সেটা প্র্যাকটিস করবো।

প্রসঙ্গগত, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন আসিফ মাহমুদ। পরে এ এফ হাসান আরিফকে (প্রয়াত) সরিয়ে আসিফ মাহমুদকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় গত বছরের নভেম্বরে। এরপর থেকে তিনি স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছেন।
অন্যদিকে মাহফুজ আলম শুরুতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ছিলেন। নিয়োগ পান গত বছরের ২৮ আগস্ট। পরে ১০ নভেম্বর তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। তবে সে সময় তাকে কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করার পর তাকে তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনজন সরকারে জায়গা পান। এর মধ্যে নাহিদ ইসলাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় পান। আসিফ মাহমুদ প্রথমে শ্রম উপদেষ্টা, পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। মাহফুজ আলম শুরুতে উপদেষ্টা পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হন।
আরও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা বৃহস্পতিবার: ইসি সচিব
রায়পুরার চরাঞ্চলে সংঘাত বন্ধে কম্বিং অপারেশন করা হবে: স্বরাষ্ট উপদেষ্টা


