কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: প্রতিবারের মতো এবারও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৪ বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক তুলে দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (০৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪৫তম জন্মদিন এবং ৯৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ পদক প্রদান করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চারজনের হাতে রোকেয়া পদক তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘বেগম রোকেয়া পদক ২০২৫’ প্রাপ্ত চার নারী হলেন- নারী শিক্ষা শ্রেণিতে (গবেষণা) রুভানা রাকিব, নারী অধিকার শ্রেণিতে (শ্রম অধিকার) কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার শ্রেণিতে নাবিলা ইদ্রিস ও নারী জাগরণ শ্রেণিতে (ক্রীড়া) ঋতুপর্ণা চাকমা।
এদিকে বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করছে। প্রতিবারের মতো এবারও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক দেওয়া হয়।
খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক এবং নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামের এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এই মহীয়সী নারী ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। দিনটি প্রতি বছর বেগম রোকেয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়। সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরাতে তার অবদান আজও প্রাসঙ্গিক এবং দিকনির্দেশক।
এ মহীয়সী নারী উপলব্ধি করেছিলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য শিক্ষা কতটা জরুরি। তার অবিস্মরণীয় সাহিত্যকর্ম, যেমন ‘সুলতানার স্বপ্ন’ এবং ‘অবরোধবাসিনী’, সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ছিল বলিষ্ঠ প্রতিবাদ। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল, যা হাজারো বালিকাকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছে।
১৯০৫ সালে রোকেয়ার বিখ্যাত ইংরেজি গ্রন্থ ‘সুলতানাস ড্রিমস’ প্রকাশিত হয়, যা পরে বাংলায় ‘সুলতানার স্বপ্ন’ নামেও প্রকাশিত হয়। বইটিকে বিশ্বের নারী জাগরণমূলক সাহিত্যকর্মের একটি উল্লেখযোগ্য ও উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বিবেচনা করা হয়। গ্রন্থটি জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর ‘ওয়ার্ল্ড মেমোরি’ তালিকায়ও স্থান পেয়েছে।
রোকেয়া সাখাওয়াত ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হলো-মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী।
আরও পড়ুন:
বেগম রোকেয়া নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে আঘাত হেনেছিলেন: তারেক রহমান
বেগম রোকেয়া নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন: প্রধান উপদেষ্টা


